স্কুল বুলিং প্রতিরোধ খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন

ডেস্ক,১৮মে:

শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে আঘাত করা এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ রোধে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারের বিধান রেখে স্কুল বুলিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার।

ওই নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি/ বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই স্কুল বুলিং (শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করা/ ভয় দেখানো) এর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বুলিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। এতে শিখন-শিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়, পরিবেশ বিনষ্ট হয় বিদ্যালয়ের। যদিও স্কুল বুলিং সাধারণত ফৌজদারি অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না। তবে সেরকম কিছু ঘটতে পারে বলে মনে হলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পূর্ব থেকে পুলিশের সাহায্য নেওয়ার কথা নীতিমালায় বলা হয়েছে।


এ ছাড়া, বিদ্যালয়ে কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যাবে না। যাতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দল/উপদলের সৃষ্টি হয়। বুলি ও ভিকটিম উভয়কে অত্যন্ত যত্নসহকারে কাউন্সেলিং করতে হবে। যাতে তাদের আচরণে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটি এই নীতিমালা প্রণয়ন করে। এই নীতিমালা হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।
বুলিংয়ের সংজ্ঞা:

নীতিমালায় স্কুল বুলিংয়ের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যালয় চলাকালীন সময় বা শুরু হওয়ার আগে বা পরে, শ্রেণিকক্ষে বা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বা বাইরে কোনো শিক্ষার্থী কর্তৃক (এককভাবে বা দলগতভাবে) অন্য কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, অশালীন বা অপমানজনক নামে ডাকা, অসৌজন্যমূলক আচরণ করা, কোন বিশেষ শব্দ বারবার ব্যবহার করে উত্ত্যক্ত বা বিরক্ত করাকে স্কুল বুলিং হিসেবে গণ্য হবে।
আরো পড়ুন

শিক্ষককে মারধরঃ ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রেপ্তার

নীতিমালায় তিন ধরনের বুলিংয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে কাউকে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত, চড়-থাপ্পড় দেয়া, লাথি ও ধাক্কা মারা, থুথু নিক্ষেপ, জিনিসপত্র জোর করে নিয়ে যাওয়া বা ভেঙে ফেলা ও অসৌজন্যমূলক আচরণ শারীরিক বুলিংয়ের পর্যায়ে পড়বে। উপহাস করা, খারাপ নামে সম্বোধন ও অশালীন শব্দ ব্যবহার ও হুমকি মৌখিক বুলিং হিসেবে চিহ্নিত হবে। এ ছাড়া, সামাজিক স্ট্যাটাস, ধর্মীয় পরিচিতি বা বংশগত অহংবোধ থেকে কোনো শিক্ষার্থীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন, কারো সম্পর্কে গুজব ছড়ানো এবং প্রকাশ্যে অপমান করা হলে তা সামাজিক বুলিং হিসেবে গণ্য হবে।

বুলিং প্রতিরোধের উপায়

বুলিং প্রতিরোধে বুলিংকারী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিলে অভিভাবকরা বিরোধিতা না করে সহযোগিতা করবে। সন্তানকে স্কুলের নিয়মকানুন মেনে চলা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্দর আচরণের জন্য উদ্বুদ্ধ করা। এ ছাড়া, বুলিংয়ের ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষের জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার, সচেতনতা সৃষ্টিতে নাটক মঞ্চস্থ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিরুত্সাহিত, স্কুলে আইসিটি ডিভাইস আনা নিষিদ্ধ করার কথাও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।