সরকারিকরণের নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ, প্রধান শিক্ষক আটক

protarona

নিজস্ব প্রতিবেদন:
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নামে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক রুহুল আমিনের বাড়িতে ভিড় করছে ভুক্তভোগীরা। এই চক্রের প্রধান হোতা পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ১২৫ নম্বর দক্ষিণ চর শাহজালার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমীন প্রিন্স (৪৫)। তাকে ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে র‌্যাব-৩ আটক করার পর থেকে বেড়িয়ে আসছে তার ভয়াবহ প্রতারণার তথ্য। প্রতারণার টাকায় গড়ে তুলেছেন আলিসান বাড়ি, গাড়ি, শিল্প প্রতিষ্ঠান,এনজিও এবং টিভি ফ্রিজের শোরুম। তার আটকের খবর দশমিনায় ছড়িয়ে পড়লে গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়।
উপজেলার চরবোরহান ইউনিয়নের দক্ষিণ চরশাহজালাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এই রুহুল আমিন। তিনি নকল ওয়েবসাইড তৈরি করে প্রতারণা করায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে ঢাকার মতিঝিল থেকে র‌্যাব-৩ আটক করে।

জানা গেছে, উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ এর ছেলে রুহুল আমীন প্রিন্স ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত হয়ে পরেন। ৭-৮ বছর আগে ঢাকা থেকে রুহুল আমীন দশমিনায় এসে ইলিংশ নামে একটি হাতের ব্রেসলেট ব্যবসা শুরু করেন। পরে সেইভ দ্য বাংলাদেশ নামে একটি এনজিও খুলে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম শুরু করেন। এনজিওর সদস্যদের সঞ্চয় গ্রহনের নামে রুহুল আমীন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওই এনজিও বন্ধ ঘোষণা করেন। পরে তিনি দশমিনা উপজেলা সদরের নতুন ব্রিজ এলাকায় একটি মোটরসাইকেল, টিভি ফ্রিজের শোরুম খুলে সেখানে বসেই বিভিন্ন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের কার্যক্রম পরিচালিত করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। একইসঙ্গে তিনি উপজেলার মাছুয়াখালী এলাকায় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করেন।

উপজেলার চরহোসনাবাদ এলাকার ঠিকাদার বেল্লাল হোসেন জানান, রুহুল আমীন তার মেয়ে তানজিলা আক্তারকে কপ্পুরকাঠি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেয়ার নামে তার কাছ থেকে চার লাখ টাকা নিয়েছেন।

দশমিনার ইলিয়াস খলিফার স্ত্রী ইয়ানুর বেগম জানান, দক্ষিণ পাতারচর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেয়ার কথা বলে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন রুহুল আমীন। দশমিনায় এই রকম শতাধিক মানুষকে চাকরি দেয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রুহুল আমীন। বর্তমানে রুহুল আমীনের প্রত্যক্ষ সহায়তায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নাম সর্বস্ব ১৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়।

এই ব্যাপারে জানতে রুহুল আমীনের বাড়িতে গেলে তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সুমাইয়া আক্তার জানান, তার বাবাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।

চরবোরহান ইউপি চেয়ারম্যান নজির আহমেদ সরদার জানান, শুনেছি রুহুল আমীন অনেক মানুষের কাছ থেকে বিদ্যালয় জাতীয়করণের কথা বলে টাকা নিয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সায়েদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে রুহুল আমীনের বিস্তারিত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।