লিগ্যাল নোটিশ পেয়েই কেটে নেয়া টাকা ফেরত দিল বাংলালিংক

Image

ডেস্ক,১৬ জানুয়ারী:

গ্রাহকের অনুমতি ব্যতীত স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইলের ব্যালেন্স থেকে টাকা কেটে নেয়ায় বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক আস ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হককে বিবাদী করে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন ময়মনসিংহ লাইভ’র সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম।

এদিকে বাংলালিংকের অফিসিয়াল ই-মেইল ও ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর ১০ ঘণ্টার মধ্যে প্রতারণার মাধ্যমে ব্যালেন্স থেকে কেটে নেয়া টাকা ফেরত দিয়েছে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ। টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে গ্রাহককে কল দিয়ে নিশ্চিত করেন বাংলালিংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

এদিকে গতকাল বুধবার ১৫ জানুয়ারি ময়মনসিংহ জজকোর্টের আইনজীবী মো. এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত এক লিগ্যাল নোটিশে জানা যায়, মো. আব্দুল কাইয়ুমের ব্যবহৃত একটি নম্বরের ব্যালেন্স থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গত ২৮, ২৯ নভেম্বর ও ৬ ডিসেম্বর অতিরিক্ত গোপন চার্জ কর্তন করা হয়। বাংলালিংক ওয়েবসাইটের ই-সেলফ কেয়ারের মাধ্যমে ওই গ্রাহক সব কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি চেক করে কনফার্ম হন যে, ইতোপূর্বে তিনি কোনো সার্ভিস চালু করেননি। বিষয়টি নিয়ে বাংলালিংকের গ্রাহকসেবা ১২১ ও ০১৯১১-৩০৪১২১ নম্বরে অভিযোগ করলে তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ করা টাকা ফেরতের জন্য অভিযোগটি আমলে নেন ও পরবর্তী ১২ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগটি সুরাহার আশ্বাস দেন। কিন্তু ১২ ঘণ্টা পরে গ্রাহককেই ফোন দিয়ে আপডেট জানতে হয় ও হচ্ছে। সেই সঙ্গে অভিযোগটির কোনো সুরাহা করতে পারেনি বাংলালিংক। এভাবে প্রতিবারই বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ তার এজেন্টের মাধ্যমে ১২ ঘণ্টা করে সময় চেয়ে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ক্ষেপণ করে।

এদিকে, ১ জানুয়ারি গ্রাহকের ব্যবহৃত নম্বরের কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রির অফিসিয়াল লিস্ট উত্তোলনের জন্য ময়মনসিংহের দুর্গাবাড়ী রোডে অবস্থিত বাংলালিংক মনোব্র্যান্ড এবং কেয়ার সেন্টারে গিয়েও কল লিস্ট পাননি। তাদের সিস্টেমে সমস্যা থাকায় তারাও কবে নাগাদ লিস্ট দিতে পারবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি। এ বিষয়টি আবারও অভিযোগ আকারে গ্রাহকসেবা হেলপ লাইনে জানানো হলে ১৪ জানুয়ারি বাংলালিংকের একজন এজেন্ট কল করে এ গ্রাহককে জানান যে, কোনো বাংলালিংক কাস্টমারকেই তার নিজস্ব কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি দেয়া যাচ্ছে না।

তাই লিগ্যাল নোটিশদাতা তার নোটিশে উল্লেখ করেন যে, আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে তার কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি হাতে না পেলে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। কারণ, বাংলালিংক অফিসিয়ালভাবে শুধু বিগত দুই মাসের কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি দিতে পারে। দুই মাস অতিক্রম হলে কোনোভাবেই কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি দিতে পারে না গ্রাহককে।

এছাড়া বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কেন জাতীয় দৈনিকগুলোতে বাংলালিংক কর্তৃৃক গ্রাহকদের ভোগান্তির বিষয়ে সচেতন করছেন না সেজন্য কমিশনের চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হককেও লিখিত জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দীর্ঘ দুই মাস ধরে বিষয়গুলো নিয়ে বাংলালিংকে অভিযোগ করে আসছি কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছিল না। বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ সময়ক্ষেপণ করে দুই মাস অতিক্রম করে কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি সরবরাহ না করে প্রতারণার অভিযোগ থেকে বাঁচতে চায়। আমার মতো কোটি গ্রাহকের সঙ্গে এমন প্রতারণা হয়ে থাকতে পারে, তাই দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে আমি আইনি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ জজকোর্টের আইনজীবী মো. এমদাদুল হক জানান, প্রতারণার মাধ্যমে বাংলালিংক গ্রাহকের ব্যবহৃত নম্বর থেকে গোপন চার্জ কর্তন করার অভিযোগ আনায় বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক আস ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হককে বিবাদী করে মামলার পূর্ব প্রস্তুতিস্বরূপ বিবাদীদের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে লিখিত জবাব দাখিল করবে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।