বিদ্যালয়ে আসার সময় আছে, যাওয়ার নেই

Image

প্রধান প্রতিবেদক,১৫ সেপ্টেম্বর:
সরকার স্কুল-কলেজ খোলার পর সরকারি প্রাথমিকে চলছে শ্রেণি পাঠ। শ্রেণি পাঠ দিতে শিক্ষকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুসরণ করতে হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৬ নির্দেশনা। এমনকি এসব বিদ্যালয়ে দুই শিফট ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। তবে তাদের অভিযোগ বিদ্যালয়ের আসার সময় অধিদপ্তর থেকে বলা হলেও বিদ্যালয় ছেড়ে যাওয়ার কোন সময় নির্দেশনায় উল্লেখ নেই। শিক্ষকদের দাবি এর ফলে সব বিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছেন তারা। কিন্তু তারা কখন বিদ্যালয় থেকে বাসায় ফিরবেন এ নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। নারী শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষা অফিস থেকে নির্দেশনা আছে বিদ্যালয়ে যখন-তখন পরিদর্শনে আসা হতে পারে। এর ফলে প্রধান শিক্ষক সারাদিনই সব ক্লাস নেয়ার পরও আমাদেরকে বসিয়ে রাখছেন।

আরো পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষিকার ১০ কোটি টাকা আত্মসাত

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন এক শিফটে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। কিছু বিদ্যালয় আছে যেখানে দুই শিফট ক্লাস চলছে। এক শিফট এর বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয় ৯.৩০ মিনিটে। আর শেষ হয় দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। দ্বিতীয় শিফটের ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয় দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে আর শেষ হয় ৩টা ৪৫ মিনিট। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের স্কুলে আসার সময় নির্ধারণ করা হয় সকাল ৯টায়। তবে যাওয়ার কোনো সময় নির্ধারণ করেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। শিক্ষকরা বলছেন, এরপর আরও সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।

মাঠ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অধিদপ্তরের আদেশ অস্পটার কারণে কিছু শিক্ষক সুযোগ নিচ্ছেন, আবার অনেক শিক্ষক স্কুলেই বসে থাকেন। কারণ এখানে আসার সময় বলা আছে কিন্তু যাওয়ার সময় উল্লেখ করা নেই।

অধিদপ্তর সূত্র বলছে, শিক্ষকদের অনুপস্থিতি ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের উপস্থিতির তথ্যও পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর অফিস আদেশে বিভাগীয় উপ-পরিচালকদের তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেয়। আদেশে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে কতজন শিক্ষার্থী সরাসরি পাঠদানে উপস্থিত রয়েছে সে সম্পর্কিত তথ্য সমন্বয় করে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী পাঠাতেও বলা হয়েছে। এ নির্দেশের ফলে শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত সময় দিতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামছুদ্দিন বলেন, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষকদের কোন কারণ ছাড়াই বিদ্যালয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। অধিদপ্তর থেকে কোনো কাজ দেয়া হলে সেটিও মানা যেত। কিন্তু কোন কাজ ছাড়া একজন শিক্ষককে এভাবে বসিয়ে রাখা অযৌক্তিক।

এ বিষয়ে অধিদপ্তরে কোন কথা বলেছেন কী না জানতে চাইলে মো. শামছুদ্দিন বলেন, এখনো কিছু বলা হয়নি। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা আমাদের করতে হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মুঠোফোনে কল ধরেননি। তবে অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, দেশের সব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি) বাস্তবায়নে তাদের পূর্ণ কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে আশরাফুল আলম নামের একজন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অধিদপ্তর থেকে আমাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষকরা ৯ টায় বিদ্যালয়ে আসবেন ও দুপুর দেড়টায় বিদ্যালয় ছেড়ে যাবেন। তবে প্রয়োজনে সময় পরিবর্তন করার সুযোগও আমাদের দেয়া হয়েছে।
সুত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।