দেশে প্রথমবারের মতো গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বড় সফলতা

primary_shiksha

ডেস্ক,২৬ ডিসেম্বর:
প্রথমবারের মতো প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মানোন্নয়নে পাঁচ বছরের সেক্টর প্ল্যান প্রস্তুত করে তা গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশনে (জিপিই) জমা দিয়েছে বাংলাদেশ।

২০২১-২০২২ থেকে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছর পর্যন্ত সমন্বিত এই পরিকল্পনা জিপিইতে জমা দেওয়া হয়েছে গত ১০ ডিসেম্বর। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জিপিই বাংলাদেশকে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে।

এর আগে বাংলাদেশে করোনার মধ্যে চার কোটি শিক্ষার্থীর ক্ষতি পোষাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ১৫ মিলিয়ন বা প্রায় ১২৬ কোটি টাকা দেয় সংস্থাটি।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘পাঁচ বছরের সেক্টর প্ল্যানের বিপরীতে শিক্ষার উন্নয়নে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন এই টাকা দেবে। তবে বেশিরভাগ অর্থ খরচ হবে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে। এই প্রকল্প তৈরি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। উন্নয়ন সহযোগীরা পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করেছে।’

এ প্রসঙ্গে গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক কে এম এনামুল হক বলেন, ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দুই বছর মেয়াদি করা, শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, এর ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-৪ অর্জিত হবে, অর্থাৎ সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়ে যাবে। তবে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ করে কমিউনিটি পর্যায়ে জীবনব্যাপী শিক্ষার সম্প্রসারণের জন্য আরও উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া বাজেট বরাদ্দ ও তার যথাযথ ব্যবহারের দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।’

জিপিইর কাছে জমা দেওয়া পরিকল্পনায় শিক্ষার উন্নয়নে যে তিনটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা হলো—সমতার ভিত্তিতে শিক্ষায় অভিগম্যতা (Access & Equity) নিশ্চিত করা, শিক্ষার প্রাসঙ্গিক ও মান (Quality & Relevance) নিশ্চিত করা এবং সুশাসন ও ব্যবস্থাপনা (Governance & Management) উন্নয়ন করা।

শিক্ষায় অভিগম্যতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও ভৌগোলিক অবস্থান, পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা, শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এখনও অনেকে পিছিয়ে রয়েছে। একইভাবে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে দরিদ্র, হতদরিদ্র ও অসহায় নারীপ্রধান পরিবার এবং নিম্ন আয়ের মানুষও পিছিয়ে রয়েছে।

সরকারের নেতৃত্বে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে; বিশেষ করে কারিকুলাম, শিক্ষাপোকরণ ও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে। তবে প্রশিক্ষণ, ক্লাসরুমের ঘাটতিসহ প্রাক-প্রাথমিকের জন্য অনেক বিদ্যালয়েই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির মান নিশ্চিত করার জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইন, যা সব স্কুলকেই অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে।

সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি এ পরিকল্পনায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত পরিকল্পনায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও অর্জনযোগ্য সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি প্রণয়নে সরকারের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী এবং নাগরিক সমাজ একসঙ্গে কাজ করেছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।