একাদশে ‘দেড় লাখ ভর্তি বঞ্চিতদের’ ফের আবেদন শুরু

ডেস্ক,১০ জুলাই:

চলতি মাসের এক তারিখ থেকে সারাদেশের কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণির ক্লাশ শুরু হয়েছে। তবে এখনও ভর্তি হতে পারেনি দেড় লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৩২৬ জন। অন্যদিকে, এবার কলেজ ভর্তির জন্য আবেদন করেছিল ১৪ লাখ ১৬ হাজার শিক্ষার্থী। এছাড়া মাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেনি। যাদের একটি বড় অংশ শিক্ষা থেকে ঝরে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।



তবে একাদশ শ্রেণিতে যেসব শিক্ষার্থী বিভিন্ন কারণে ভর্তি হতে পারেনি কিংবা ভর্তির আবেদন করতে পারেনি তাদের ফের আবেদনের সুযোগ দিচ্ছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। আজ বুধবার থেকে ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ায় ভর্তির আবেদন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত চলবে এ আবেদন। কলেজে আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের ভর্তি করা হবে। সংশ্লিষ্ট বোর্ডসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, এ বছর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ৮৬৩ শিক্ষার্থী। দেশের অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের তুলনায় এই বোর্ডে শিক্ষার্থী ভর্তির হার সবচেয়ে বেশি। এ বোর্ডে এখনও আসন খালি রয়েছে প্রায় দুই লাখ। তাই শেষ পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থীই ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে থাকবে না বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, ভর্তি না হওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকে ভর্তির জন্য আবেদন করে কলেজ পেয়েও ভর্তি হয়নি। অন্যদিকে, অনেকে আবার ভর্তির জন্য আবেদন করেনি। কিন্তু এখন এদের ভর্তির প্রক্রিয়া কি হবে; তারা কি ভর্তি হতে পারবে? এমন প্রশ্নের জবাবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, আবেদনকারী সকল শিক্ষার্থীই ভর্তির সুযোগ পাবে। কারণ অসংখ্য আসন খালি আছে। এক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছুরা কলেজে গিয়ে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে সরাসরি ভর্তি হতে পারবে।

এর আগে গত ১২ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইন ও মোবাইলে এসএমএস করে আবেদনের সুযোগ পায় এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। একেকজন শিক্ষার্থী অনলাইনে পাঁচ থেকে ১০টি কলেজের জন্য আবেদন করার সুযোগ পায়। এদিকে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করেছেন ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ জন শিক্ষার্থী। তবে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণদের মধ্যে ২ লাখ ৪২ হাজার ৪২ শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তির জন্য প্রথম ধাপে আবেদন করেননি। গত বছরও প্রথম ধাপে আবেদনের বাইরে ছিল প্রায় আড়াই লাখ।

শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবছরই এভাবে বেশকিছু শিক্ষার্থী কলেজ পর্যায়ে এসে শিক্ষার সাধারণ ধারায় থাকে না। তারা হয় কারিগরি ডিপ্লোমা বা বিদেশে চলে যায়। এভাবে কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পরে। মেয়েদের অনেকের এই সময়ে বিয়ে হয়ে যায়। ফলে তারা সাধারণ কলেজ ভর্তির বাইরে থেকে যায়।

এবার কলেজে ভর্তি হতে ১০ লাখ ৫২ হাজার ১৮৪ জন অনলাইনে এবং ৩ লাখ ৭৪ হাজার ২২২ জন এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেছে। ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৬টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে অনলাইনে ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৫টি এবং এসএমএসের মাধ্যমে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫১টি আবেদন।

এবার ঢাকা বোর্ডে তিন লাখ ৯৯ হাজার ১৯৫ জন, রাজশাহীতে এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৮২ জন, চট্টগ্রামে এক লাখ ২২ হাজার ৩৬ জন, কুমিল্লায় এক লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৫ জন, যশোরের এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৯৪ জন, বরিশালে ৭৭ হাজার ৪২০ জন, সিলেটে ৮০ হাজার ১৬২ জন, দিনাজপুরে এক লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৮ জন, ময়মনসিংহে ৯৬ হাজার ৫৪৩ জন এবং মাদ্রাসা বোর্ডে এক লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে আবেদন করেছে।

এদিকে, সম্প্রতি আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ১০ থেকে ১৬ জুলাই ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা নূন্যতম জিপিএ থাকা সাপেক্ষে কলেজে ম্যানুয়াল ভর্তির আবেদন জমা দিবে। আবেদনগুলো বিবেচনা করে আগামী ১৮ জুলাই শূন্য আসনের ভিত্তিতে কলেজ ভর্তিযোগ্যদের মেধাভিত্তিক তলিকা প্রকাশ করবে। আগামী ২০ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই কলেজগুলো শূন্য আসনে ভর্তি গ্রহণ করবে। আর ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কলেজগুলোকে বোর্ডে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী তালিকা বোর্ডে জমা দিতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ম্যানুয়াল ভর্তির ফি ৪৪৫ টাকা। এর মধ্যে আবেদন ফি ১৫০ টাকা, রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য ফি ১৯৫ টাকা এবং ডাটা এন্ট্রি ফি ১০০ টাকা। ভর্তির সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশগ্রহণ করবে। কলেজগুলোর শূন্য আসনের তালিকা বোর্ডের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হয়েছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।