পূজার বাদ্যি বাজে..

অনলাইন ডেস্ক:

ছেলেদের ক্ষেত্রে পূজার সময় ধুতি-পাঞ্জাবির ওপর আর কোনো পোশাক ভালো লাগে না। আজকাল ধুতির রঙেও পরিবর্তন এসেছে, আগে শুধু সাদা রঙের ধুতি পরত। এখন বিভিন্ন রঙের যেমন সাদা বা অফ হোয়াইট রঙের পাঞ্জাবির সঙ্গে লাল ধুতি, কালো ধুতি, লাল বা মেরুন রঙের পাঞ্জাবির সঙ্গে সাদা বা অফ হোয়াইট ধুতি, গোল্ডেন, সবুজ প্রায় সব ধরনের ধুতি এখন পাওয়া যায়। আর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের উত্তরীয়। উত্তরীয়র ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা রঙের বিচরণ। চারদিকে ঢাকঢোলের বাজনা, শঙ্খের শব্দ, ধূপের ঘ্রাণ, বিভিন্ন মন্ত্রে মুখরিত পূজার আয়োজনে নিজেকে যেন না সাজালেই নয়।

সামনেই দশমী। দশমীতে সাধারণত লাল রংকে প্রাধান্য দেয়া হয়। কারণ সেদিন দুর্গাকে সিঁদুর পরিয়ে বিসর্জন দেয়া হয়। আর চলে সিঁদুর খেলা।
সেদিন বিবাহিত মেয়েরা দুর্গার পায়ে রাখা সিঁদুর মাথায় দেন আর ওই সিঁদুর সারা বছর তারা ব্যবহার করেন। তরুণীরা সিঁদুর রঙের সঙ্গে মিলিয়ে দশমীর দিন লাল রঙের শাড়ি পরে। শাড়ির সঙ্গে সোনার গহনা পরা যেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্য। সেই শাশুড়ির দেয়া ভারী ভারী গহনা এখন অনেকেই পরতে চান না।
এছাড়া যে কোনো শাড়ির সঙ্গে গলায় রুদ্রাক্ষের মালা পরলে একটা ট্র্যাডিশনাল লুক আসবে। পূজার সময় শাড়ির সঙ্গে ব্লুাউজের কাট গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ফুল সিøভের ব্লাউজ, পিঠে গোল বা স্কয়ার গলা থাকলে ভালো।
মোটকথা, বাঙালির পূজার পোশাকে বাঙালিয়ানা ধরা দেয় উৎসবের আদলে।
সাজসজ্জা
সাজসজ্জা যদিও নিজের রুচি ও ভালো লাগার বহিঃপ্রকাশ, তবুও এটি যেহেতু ধর্মীয় উৎসব তাই ধর্মীয় ট্র্যাডিশনকেই গুরুত্ব দেয়া হয়। হিন্দুধর্মে বিবাহিত মেয়েদের সিঁথিতে সিঁদুর থাকবে না তা যেন অসম্ভব। হিন্দু বিবাহিত মেয়েদের সিঁথিতে সিঁদুর যেন সাজের পূর্ণতা এনে দেয়। এই পূর্ণতার মাঝে পোশাকের গুরুত্বও অনেক। পূজার সময় মেয়েরা সাধারণত শাড়ি বেছে নেয়। আর শাড়ির সত্যিকার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে ব্লাউজের মাধ্যমে। ব্লাউজের কাটছাঁটে পূজার আমেজ ফুটে উঠলে পুরো পোশাকে একটা উৎসবধর্মী ভাব চলে আসবে। ফ্যাশন হাউসগুলো চেষ্টা করে নতুনত্বকে ধরে রেখে ট্র্যাডিশনকে প্রাধান্য দিতে। সাজ-পোশাকে বাঙালিয়ানা থাকা চাই। পূজার ব্লাউজের বিশেষ ধরন সম্পর্কে কে-ক্র্যাফটের ডিজাইনার শাহনাজ খান জানান, ব্লাউজের ক্ষেত্রে হাতা ও গলার স্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে পূজার বিশেষ লুক দেয়া হয়। ব্লাউজের গলায় ও হাতে কুচি দিয়ে একটা ব্যতিক্রমী আমেজ নিয়ে আসা যায়। থ্রি কোয়ার্টার হাতার সঙ্গেও কুচি দেয়া যায়। এছাড়া ঘটিহাতা তো রয়েছেই। একটু কারুকাজ করা ঘটিহাতার ব্লাউজের কোথায় যেন পূজার আমেজ খুঁজে পাওয়া যায়। ব্লাউজে এমব্রয়ডারির কাজ করা থাকলেও বেশ উৎসবধর্মী একটা ভাব আসে। হাতায় লেইস অথবা কুচি দেয়া ব্লাউজের সঙ্গে এক প্যাঁচে পরা শাড়ি মানিয়ে যায় বেশ। এছাড়া ঘটিহাতা বা থ্রি কোয়ার্টার হাতায় বড় কুচি দেয়া ব্লাউজও ভালো লাগবে। জমকালো পার্টিতে মসলিন বা গর্জিয়াস কোনো শাড়ির সঙ্গে অ্যান্ডি মেশানো ব্লাউজ মানানসই। আবার টাঙ্গাইল বা বড় পাড়ের সাধারণ সুতি শাড়ির জন্য ঘটিহাতা বা পাইপিং বসানো ব্লাউজ বেশি ভালো দেখাবে। শাহনাজ খান জানান, ব্লাউজ শাড়ির সঙ্গে কনট্রাস্ট হতে পারে। আবার এক রঙেরও হতে পারে। তবে যেহেতু পূজা, লাল-সাদা থাকা চাই। আবার শাড়িতে সোনালি সুতা বা জরি দিয়ে কাজ করা থাকলে ব্লাউজ গোল্ডেন হতে পারে। যাই হোক না কেন, পূজার সাজে স্নিগ্ধতা থাকা জরুরি। সেই স্নিগ্ধতার সঙ্গে সিঁদুরের পবিত্রতা মিলেমিশে যেন পূজার আমেজে পূর্ণতা এনে দেয়। বিউটি এক্সপার্ট কাজী কামরুল ইসলাম বলেন, সিঁদুর বিভিন্ন স্টাইলে পরতে দেখা যায়। বিবাহিত মেয়েদের সিঁথিতে সিঁদুর থাকা জরুরি এবং এ সাজটি বিভিন্নভাবে সম্পন্ন করা যায়। সাধারণত যাদের মুখ গোল, কপাল অপেক্ষাকৃত ছোট এক প্যাঁচে শাড়ি ঘটিহাতা বা হাতায় কুঁচি দেয়া ব্লাউজের সঙ্গে মাঝখানের সিঁথিতে সিঁদুর, কপালে বড় বা মাঝারি লালটিপ মানানসই। যাদের মুখ লম্বা, কপাল অপেক্ষাকৃত বড় তাদের পাশে সিঁথি করে কপালের মাঝ বরাবর চিকন করে সিঁদুরের টান দিলে ভালো লাগে। কপালে লম্বাটে হাতে আঁকা টিপ। এছাড়া ত্রিভুজাকার করেও সিঁদুর ভালো মানাবে। সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে ছোট্ট বা চিকন করে সিঁদুর থাকলেই ভালো। জমকালো শাড়ি-ব্লাউজের সঙ্গে কখনো মোটা কখনো চিকন, কখনওবা সাইড সিঁথি করে মাঝখানে সিঁদুর এঁকে দিলে ভালো মানায়। খোলা চুলে চিকন করে এবং বাঁধা চুলে মোটা করে সিঁদুর আঁকা যায়।  স্টাইল কর্নার ডেস্ক
মডেল: রুমা, রিবা ও জনি
Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।