সরকারী প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ বিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে

তপন বিশ্বাস ॥ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ইতিপূর্বে মহিলা শিক্ষক নিয়োগের জন্য ভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও নতুন বিধিমালায় পুরুষ ও মহিলা শিক্ষকদের জন্য অভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা রাখা হয়েছে। আগে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বয়সসীমা ছিল ২৫ থেকে ৩৫ বছর। কিন্তু নতুন বিধিতে সরকারী কর্মকমিশনের নিয়োগবিধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ থেকে ৩০ বছর। সহকারী শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট পদের শতকরা ২০ ভাগ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রীধারীদের মধ্যে থেকে নেয়া হবে। নতুন এই নিয়োগ বিধিমালা অনুমোদনের জন্য প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। যা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক বিধিমালা ২০১৭ নামে অভিহিত হবে।

সচিব কমিটিতে পাঠানো প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকার ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রয়োগ ও প্রসারের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে গুণগতমান সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ একান্তই অপরিহার্য। বিদ্যমান নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনপূর্বক এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। বিধিমালা প্রণয়নের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে প্রণীত বিধিমালায় সহকারী শিক্ষকদের সরাসরি নিয়োগ এবং প্রধান শিক্ষকদের শতকরা ৩৫ ভাগ পদ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে এবং সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে ৬৫ ভাগ শিক্ষক পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণের বিধান ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের ৯ মার্চ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়। ফলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়টি সরকারী কর্মকমিশনের বিবেচনাধীন বিষয়। যার কারণে নতুন করে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন অপিরহার্য হয়ে পড়েছে। আগের মতোই নতুন বিধিমালার আওতায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ উপজেলা বা থানাভিত্তিক হবে। সরকারী কর্মকমিশনের সুপারিশ ব্যতিরেকে কমিশনের আওতাভুক্ত কোন প্রধান শিক্ষক পদে কোন ব্যক্তিকে সরাসরি নিয়োগ দেয়া যাবে না। সরকারীভাবে গঠিত কেন্দ্রীয় সহকারী শিক্ষক নির্বাচন কমিটির সুপারিশ ছাড়া কোন ব্যক্তিকে সহকারী শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগ দেয়া যাবে না। বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা না হলে কাউকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া যাবে না। এমন ব্যক্তিকে বিবাহ করেছেন অথবা বিবাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন এমন ব্যক্তিকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না। ১৩ থেকে ১৬ বেতন গ্রেডের কোন পদ থেকে ১০ থেকে ১২ বেতন গ্রেডের কোন পদে এবং ১০ থেকে ১২ বেতন গ্রেডের কোন পদ থেকে ৯ম অথবা তদুর্ধ কোন পদে সরকারী কর্মকমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া যাবে। আগের বিধিতে এই শর্তগুলো ছিল না।

বিদ্যমান নিয়োগবিধির ৯ম বিশেষ বিধানে বলা ছিল নিয়োগপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি চাকরিতে যোগদানের ৩ বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ কিংবা উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনে ব্যর্থ হলে তার চাকরি স্থায়ী করা হবে না বলে যে শর্ত ছিল তা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ২৫ থেকে ৩৫ এর স্থলে বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশনের নিয়োগবিধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সংশোধিত বয়সসীমা ২১ থেকে ৩০ করা হয়েছে। মোট পদের ৬৫ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে ৩৫ ভাগ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণের শর্ত আগে ছিল এখনও থাকবে।

সুত্র : জনকন্ঠ

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।