সম্ভাবনার কারিগরি শিক্ষা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে

বিভাষ বাড়ৈ ॥ প্রায় ১৩ বছর আগে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বিষয় হিসেবে কারিগরি শিক্ষা সেক্টরে চালু করা হয়েছিল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগ। নানা সম্ভাবনার কথা বলায় অনেক আশা নিয়ে মেধাবীরা এ বিষয়ে পড়ালেখার জন্য ভর্তি হচ্ছেন সরকারী পলিটেকনিট ইনস্টিটিউটে। অথচ দেশের কারিগরি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের প্রধান প্রতিষ্ঠান ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কোন শিক্ষকই নেই। মেধাবীরা আশা নিয়ে ভর্তি হলেও তাদের কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে পড়ানো হচ্ছে। একই অবস্থা অন্যান্য পলিটেকনিকেও।

অন্যদিকে সম্ভাবনাময় বিষয় হিসেবে আরও অনেক বিষয় চালু করা হলেও আজ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সৃষ্টি করা হয়নি কর্মসংস্থানের কোন পদ। এক সময় আশার আলো দেখলেও এখন চোখে রীতিমতো অন্ধকার দেখছেন খোদ সরকারী পলিটেকনিক থেকে পাস করা হাজার হাজার ডিপ্লোমাধারী। তবে বৈষম্য, অবহেলা আর অব্যবস্থাপনা কেবল এখানেই নয় অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে দেশের কারিগরি শিক্ষার সঙ্কটের নানা চিত্র। যা নিয়ে বছরের পর বছর কেবল দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও দেশের শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা, তবে সঙ্কট উত্তরণের কোন উদ্যোগ নেই বললেই চলে। কারিগরি শিক্ষা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কথায় বেরিয়ে এসেছে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে দক্ষ জনশক্তি তৈরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে সবসময়। সরকারীভাবে ঘোষণাও দেয়া হচ্ছে এ শিক্ষার মর্যাদা বৃদ্ধির। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, সবচেয়ে বেশি অবহেলা আর সঙ্কটের মুখে পড়ে আছে এ শিক্ষাই। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ক্রমেই বাড়লেও এ খাতের প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেবল উপেক্ষা আর বৈষম্য। ভয়াবহ শিক্ষক সঙ্কট, শিক্ষক ছাড়া ডাবল শিফট চালু, অনিয়মিত বেতন, ক্লাস না হওয়া, শিক্ষক ছাড়াই বিভাগ খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি, উচ্চশিক্ষার সুযোগ বন্ধসহ বহুমুখী সঙ্কটে বিপর্যস্ত কারিগরি ও বৃক্তিমূলক শিক্ষা কার্যক্রম। সঙ্কট এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, প্রতিবছর হাজার হাজার নতুন শিক্ষার্থী নিয়ে ডাবল শিফটে শিক্ষাদান চললেও খোদ সরকারী পলিটেকিনিকগুলোতে ৪০ থেকে ৬০ থেকে শতাংশ পদে কোন শিক্ষকই নেই। অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষও নেই অনেক প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষক ছাড়াই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে অসংখ্য বিভাগ, যেখানে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর চার বছরের ডিপ্লোমা পাসের পর নেই উচ্চশিক্ষার সুযোগ। অথচ এমন সঙ্কটের পরও গণহারে দেয়া হচ্ছে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন। রাষ্ট্রীয়ভাবে বছরের পর বছর গুরুত্বপূর্ণ খাত বলা হলেও এভাবে অবহেলার শিকার আর কতদিন? এ প্রশ্ন এখন সংশ্লিষ্ট সকলের।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন সঙ্কট রেখে বছরের পর বছর ধরে কারিগরি শিক্ষার মতো প্রায়োগিক শিক্ষা প্রদান করা মানে হচ্ছে শিক্ষার নামে প্রহসন। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে যতটা আলোচনা হচ্ছে, এ শিক্ষা খাতে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ততটাই পিছিয়ে রয়েছে। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে যারা গবেষণা করছেন তারাও শঙ্কিত এই ভেবে যে, এ খাত নিয়ে কথা বেশি হলেও কাজ হচ্ছে কম। এ শিক্ষাকে দক্ষ জনশক্তি তৈরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত ও এর মর্যাদা বৃদ্ধির কথা বারবার বলা হলেও আসলে তার বাস্তবায়ন নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই মুহূর্তে মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতের হার ১৪ শতাংশ। গত কয়েক বছরের এই হার বেড়েছে। অথচ উন্নত দেশগুলোতে এ হার ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে দ্রুত সঙ্কট নিরসনের দাবি জানিয়ে বলেছেন, শিক্ষার্থীর হার ১৪ শতাংশ হলেও তাদের সমস্যা দেখার উদ্যোগ নেই।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে দেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে হারে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে না। তাই বিদেশের বাজার খুঁজতে হয়। কিন্তু সেখানে অদক্ষ শ্রমিকের কোন মূল্য নেই। ইরাক, ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে আমাদের দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ভাল চাহিদা রয়েছে।

কারিগরি প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান

জাতীয় দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্রে ২০২১ সালের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর ২০ ভাগ কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে মোট শিক্ষার্থীর ১৪ ভাগ কারিগরি শিক্ষায় পড়াশুনা করছে বলে বলছে সরকার। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোন কারিগরি কোর্স নেই। মাধ্যমিক পর্যায়ে রয়েছে এসএসসি ভোকেশনাল ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে রয়েছে এইচএসসি ভোকেশনাল এবং এইচএসসি বিএম। বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছে সরকারী ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ৪৯, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট ছয়টি, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং একটি এবং সার্ভে ইনস্টিটিউট দুটি। তাছাড়া রয়েছে ৩৫ টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ৬৪ টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, ৬৪ টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজ। বেসরকারী পর্যায়ে রয়েছে শতাধিক কৃষি ডিপ্লোমা এবং দেড়শ’র মতো ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। সরকারী বেসরকারী মিলিয়ে দেশে মোট কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন সাত হাজারের ওপরে। তেজগাঁওয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পর এ স্তরে দক্ষ জনসম্পদ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে সহস্রাধিক বিদ্যালয়ে এসএসসি ভোকেশনাল কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়া দুই শতাধিক বেসরকারী কলেজে এইচএসসি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট) পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। নতুন শিক্ষানীতিতে সরকার কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছে। এ নীতি অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষার বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এছাড়া একটি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় চালুর কথা বলা হয়েছে।

খোদ সরকারী পলিটেকনিকই সঙ্কটে ধুঁকছে

সরকারী পলিটেকনিক সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইনস্টিটিউট আছে মোট ৪৯। যার মধ্যে পুরাতন ২০ রাজস্বভুক্ত ছিল আগেই। প্রকল্পের ঊনত্রিশটিও পরে রাজস্বভুক্ত করা হয়। এছাড়া আছে সরকারী মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট বা একটি বিভাগ নিয়ে চলা সরকারী পলিটেকনিক। সকালের প্রথম শিফটে প্রায় ২৫ হাজার ও বিকেলের দ্বিতীয় শিফটে আরও প্রায় ২৫ হাজারসহ প্রতি বছর অর্ধ লক্ষাধিক নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় পদে পদে নানা সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এছাড়া এসএসসি ভোকেশনাল ও এইচএসসি ব্যবসায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও কয়েক লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদেরও সমস্যার শেষ নেই। প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসেও খুব একটা নতুনত্ব নেই। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ শিক্ষকের অভাব রয়েছে। বহু প্রতিষ্ঠানে পুরো বিভাগ চলছে কোন শিক্ষক ছাড়াই। এ চিত্র ঢাকা পলিটেকনিক থেকে শুরু করে দেশের নামীদামী সরকারী পলিটেকনিকেরই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে নানা সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেয়ায় এর প্রতি শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের আগ্রহও কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যে সঙ্কটের কথা বলে আসছেন তার সমাধানের নেই কোন উদ্যোগ। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ এম এ সাত্তার এ খাতের অবহেলা আর সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বলেন, যে অবস্থা তাতে এই শিক্ষায় বেশি মানুষকে আগ্রহী করে তোলা কঠিন। শিক্ষার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও সবচেয়ে কম অর্থ বরাদ্দ হয় এ খাতেই। অন্যান্য শিক্ষায় যে এমপিও তার অর্ধেকও এখানে পায়না। বহু কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠান চলছে একজন বা দুজন শিক্ষক দিয়ে। এভাবে কি উন্নয়ন সম্ভব? তবে এটাও বাস্তব যে বর্তমান সরকারের মেয়াদে এ খাতের উন্নয়নে যতটুকু ভাবা হয়েছে তা হয়নি গত ৪০-৪৫ বছরেও। সরকারী বেসরকারী নানা উদ্যোগের ফলেই কয়েক বছরের মধ্যে এ শিক্ষায় শিক্ষার্থী এনরোলমেন্ট বেড়েছে। তবে তাদের সমস্যার কথা ভেবে পদক্ষেপ নিলেই তারা উপকৃত হবে বলে বলছেন এ শিক্ষক নেতা।

কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষকদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর ও ইন্সট্রাক্টর পদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য জুনিয়র লেকচারার, লেকচারার, প্রফেসর প্যাটার্নের চাকরি কাঠামো সরকার বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত শিক্ষকরা সেই মর্যাদা পাননি। ইন্সট্রাক্টর ও ইন্সট্রাক্টর পদের এমএ, এমএসসি, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, এমএস-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এমনকি পিএইচডি করেও শিক্ষকরা জুনিয়র লেকচারার, লেকচারার, প্রফেসর প্যাটার্নের মর্যাদা পাননি।

এসব কারণে বর্তমানে দেশের ৪৯ পলিটেকনিকে চালুকৃত দ্বিতীয় শিফটের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। প্রায় ৮০ ভাগ শিক্ষক সঙ্কট নিয়েই ওই শিফট চালু করা হয়েছিল, কিছু শিক্ষক নিয়োগ হলেও শিক্ষক সঙ্কট এখনও ৫০ শতাংশের ওপর। অপরদিকে যে ক’জন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন, মাসের পর মাস ধরে তাদেরও বেতন-ভাতা হয় না। সকল শিক্ষকই প্রথম শিফটের। বাড়তি ক্লাস নেয়ার বিনিময়ে তাদের মূল বেতনের ৫০ ভাগ সম্মানী দেয়ার কথা হলেও সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আসা এক চিঠি নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, সকালের শিক্ষকরাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে দ্বিতীয় শিফটে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখছে। তারা সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করায় মূল বেতনের ৫০ শতাংশ সম্মানী পাচ্ছেন কিছুদিন হলো। এক সময় ছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। কিন্তু সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি আসছে যেখানে বলা হচ্ছে ২০১৫ সালের আগের স্কেলে সম্মানী দেয়া হবে। এছাড়াও আরও বেশকিছু বিষয়ে আপত্তি উঠেছে শিক্ষকদের মাঝে।

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি ইনস্টিটিউটে একই সঙ্কট। শিক্ষক সঙ্কট তুলনামূলক কম আছে সবচেয়ে বড় ঢাকা পলিটেকনিকে। কিন্তু তার পরেও অবস্থা করুণ। এখানে এনভায়নমেন্টাল টেকনোলজি বিভাগ খোলা হয়েছে ১৩ বছরেও আগে। আশা নিয়ে ভর্তি হচ্ছে মেধাবীরাও। কিন্তু এখন গুরুত্বপূর্ণ এ বিভাগে কোন শিক্ষকই নেই। অন্য বিষয় থেকে শিক্ষক ধার করে এনে কিংবা একই বিভাগ থেকে পাস করা ছাত্রদের দিয়ে মাঝে মাঝে কোনমতে কাজ চলছে। বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির (বাপশিস) সাবেক সভাপতি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক নির্মল চন্দ্র সিকদার বলছিলেন, দেখেন ঢাকা পলিটেকনিকের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চলছে কোন শিক্ষক ছাড়াই। বিভাগটিকে নিয়মিত কোন শিক্ষকই নেই। একই অবস্থা আছে অনেক প্রতিষ্ঠানে। এছাড়া সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রনালয়ের দেয়া চিঠির কারণে শিক্ষকরা নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এভাবে কি ভাল ফল পাওয়া যায়? তবে এ শিক্ষক নেতা যদিও বলছেন, নানা সমস্যা আছে তার পরেও সরকারের নেয়া কিছু পদক্ষেপের কারণে দীর্ঘদিন ধরে লেগে থাকা কিছু সমস্যার সমধান হয়েছে।

উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন কী ম্লান হয়ে যাবে?

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা আর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অসহযোগিতায় পূরণ হচ্ছে না দেশের লাখ লাখ কারিগরি ডিপ্লোমাধারী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন। উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ দীর্ঘ ৭ বছরেও বাস্তবায়ন করেনি দেশের কোন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ক্রেডিট সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান কার্যক্রম শুরু করতে ২০১০ সালের ২০ ডিসেম্বর চিঠি দিলেও আজ পর্যন্ত তা কার্যকর করেনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে এক সময় আশার আলো দেখলেও হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ।

কর্মকর্তারা বলছেন, জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুসারে উদ্যোগ নিলেও তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিমাতাসুলভ আচরণে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এনভায়নমেন্টাল টেকনোলজিনহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে, এক শ্রেণীর কর্মকর্তা উদ্যোগ সফল হতে দিতে চান না। সরকারের এ উদ্যোগ সফল হলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও ভুঁইফোড় কারিগরি ইনস্টিটিউটের শিক্ষা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের স্বার্থরক্ষায় কাজ করছেন এসব অসৎ কর্মকর্তা।

source: dailyjanakantha

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।