দেশে শিক্ষার মান নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাদের (সমালোচকদের) বলব, রাতারাতি সবকিছু হয় না। আর মানের মাত্রাটা কী, সেই ব্যাখ্যা আমরা এখনও পাইনি। যারা এই প্রশ্নটা তোলেন তাদের কাছ থেকে যদি এর ব্যাখ্যা পেতাম তাহলে খুশি হতাম। শনিবার গণভবনের ব্যাংকুয়েট হলে সকালে ২০১৭ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পড়ালেখার মান নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কিছুদিন অবস্থান করে কোন কোন এলাকায় মানের ঠিক নেই তা জানালে খুশি হতাম। পাশাপাশি পড়ালেখার মান উন্নয়নে কার্যকর কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়েও সহযোগিতা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, আমরা বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেই। ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমরা ২শ ২৫ কোটি ৪৩ লাখ বই বিতরণ করেছি। নতুন বই পেলে আনন্দের অনুভূতি হয়। সুন্দর এই অনুভূতি পড়ালেখার আগ্রহ বাড়ায়। এ জন্যই আমরা প্রতিবছর সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেই। তিনি বলেন, বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার আরেকটি কারণ আছে। অনেক বাবা-মা ছেলে-মেয়েদের বই কিনে দিতে পারে না। অনেকে অবহেলার কারণেও বই কিনে দেয় না। তাই বছরের প্রথম দিনেই আমরা তাদের হাতে বই তুলে দেই যাতে সন্তানদের পড়ালেখার জন্য বাবা-মায়ের কোনও অজুহাত না থাকে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মান সবসময় পরিবর্তনশীল। বিশ্বে সবকিছুতেই পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা এখন বিজ্ঞান শিক্ষা, প্রযুক্তি শিক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। শিক্ষাকে সার্বজনীন করেছি। প্রতিবছরের শুরুতেই আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিচ্ছি। এমনকি ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী তা-বের মধ্যেও আমরা সব শিক্ষার্থীর হাতে সময়মতো বই তুলে দিয়েছি। শিশুরা শারীরিক ও মানসিক বিকাশ, মেধা ও মনননের বিকাশ ঘটিয়ে আরও উদার হয়ে সংস্কৃতি, ধর্ম, খেলাধূলা- সব ক্ষেত্রেই পারদর্শী হয়ে উঠবে বলে আশাবাদী।
অনুষ্ঠানে যেসব শিশুরা বই গ্রহণ করেছে তাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা মৌলিক অধিকার। এই অধিকার সবাইকে গ্রহণ করতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা। দারিদ্র্যমুক্ত করতে হলে সবাইকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবেক। শিক্ষাই দারিদ্র্যমুক্তির মূল ভিত্তি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বছরের প্রথম দিনে আজ দেশব্যাপী পালন করা হবে বই উৎসব।