রাবিতে শঙ্কা কাটিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন, ৩০% অনুপস্থিত

ডেস্ক: ক্ষমতাসীন দলের বাধার শঙ্কা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মডেল স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

তবে হেনস্তার আশঙ্কায় চাকরিপ্রার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক আনসার উদ্দিন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজী ভবনে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে চলমান পরিস্থিতির কারণে উপস্থিতি একটু কম হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেখ রাসেল মডেল স্কুলে ১৩টি পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ৯ জন সহকারী শিক্ষক, একজন হিসাব সহকারী, একজন অফিস সহকারী ও দুজন সাধারণ কর্মচারী পদের বিপরীতে প্রার্থীদের আবেদন আহ্বান করা হয়। আইইআর পরিচালক জানান, ১৩টি পদের বিপরীতে ৪৭৪ জন চাকরিপ্রার্থী থাকলেও গতকাল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৩২৯ জন। অর্থাৎ ৩০ শতাংশের বেশি চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেননি।

এর আগে গত শুক্রবার অনুষ্ঠেয় ২৭টি পদের নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বয়সসীমা বাতিল করে দলীয় লোকদের নিয়োগের দাবিতে চলা এ কর্মসূচিতে চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হেনস্তা ও লাঞ্ছনার শিকার হন। এ ঘটনার আগের রাতে পরীক্ষা বন্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান এবং আইসিটি সেন্টারের প্রশাসক অধ্যাপক খাদেমুল ইসলাম মোল্যাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এর আগের দিন বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের আয়া ও মালি পদের নিয়োগ পরীক্ষাও বন্ধ করে দেয় আওয়ামী লীগ।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয় নেতারা যেকোনো মূল্যে পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিলে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের আমলে কোনো নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশে ওই দিন রাতে বৈঠক করে আন্দোলন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

পরীক্ষায় বাধা দেওয়া হবে না জানিয়ে শনিবার রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষায় আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো বাধা দেবে না। চাকরিপ্রার্থীরা শঙ্কা ছাড়াই পরীক্ষা দিতে পারবেন। ’ তিনি বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় বয়সসীমা বাতিল, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের কোটার দাবি ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে আমরা আন্দোলন করে আসছিলাম। ’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের মার্চ মাসে উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ও উপ-উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় দলীয় প্রার্থীদের নিয়োগ না দেওয়ায় বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী মার্চে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।