যৌন হয়রানির দায়ে জবির শিক্ষক রাজীব মীর বরখাস্ত

জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের একাধিক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশারেফ হোসেনকে (রাজীব মীর) বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৪তম সিন্ডিকেট সভায় তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে  জানিয়েছেন একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য। তবে ঠিক কত দিনের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে তা জানা যায়নি।

এর আগে ২০১৬ সালের এপ্রিলে এক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১তম সিন্ডিকেট সভায় রাজীব মীরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর আগে  ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল সাংবাদিকতা বিভাগের ওই ছাত্রী রাজীব মীরের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে হুমকি প্রদানসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেন। এ সময় অভিযোগের সপক্ষে তিনি একটি মুঠোফোন রেকর্ডও প্রশাসনের কাছে প্রদান করেন। পাশাপাশি রাজীব মীরের বিরুদ্ধে ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ নম্বর কম প্রদান করার অভিযোগ এনে স্নাতক পরীক্ষার নম্বরও তুলে ধরেন তিনি। এসব অভিযোগের পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে ওই ছাত্রী তার একাডেমিক নিরাপত্তাও চেয়েছিলেন।

ওই ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেজারার সেলিম ভূঁইয়াকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ওই বছর ১১ এপ্রিল রাজীব মীরসহ ৩ শিক্ষককে মাস্টার্সের ক্লাস থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করে।

পরবর্তীতে স্নাতক চতুর্থ বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থীও রাজীব মীরের বিরুদ্ধে একাডেমিক ফলাফলের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে। এদিকে রাজীব মীরের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে ক্যাম্পাসে দুটি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনও সে সময় কর্মসূচী পালন করেছিল।

এছাড়া রাজীব মীরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল তদন্ত করে । তদন্তে রাজীব মীরের দোষ খুঁজে পায় কমিটি।

২০১৪ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজীব মীরের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেয়া, ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়াসহ নানা অভিযোগ এনে তার অপসারণ দাবি করে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছিল কয়েকশ শিক্ষার্থী। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপিও দিয়েছিল। এর আগে ২০০৪ সালে পূর্বতন কর্মস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে রাজীব মীরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল ছাত্রীরা।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।