মঙ্গলবার্তা নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা

অনলাইন রিপোর্টার॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়েছে পয়লা বৈশাখের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা।

শুক্রবার সকাল ৯টার সময় এ শোভাযাত্রা শুরু হয়। এর উদ্বোধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী।

উল্লেখ্য, গত বছর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কো বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ঘোষণার পর এবারই প্রথম এ শোভাযাত্রা বের করা হলো।

‘আনন্দালোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ প্রতিপাদ্যে অকল্যাণ ও অশুভকে রুখে দেওয়ার প্রত্যয়ে বটমূলে বর্ষবরণের প্রভাতী অনুষ্ঠান শেষে বের হয়েছে ২৯তম মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় গীতও রবি ঠাকুরের গান, ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’।

বিভিন্ন লোকজ অনুষঙ্গ আর বিশাল আকৃতির সব বাহন নিয়ে এ শোভাযাত্রা চারুকলার সামনে থেকে বের হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল (সাবেক রূপসী বাংলা) হোটেল চত্বর ঘুরে টিএসসি প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের এ বর্ণিল আয়োজনটি রঙে-ঢঙে পায় ভিন্ন এক মাত্রা। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতির জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্ববাসীর আগ্রহের বিষয়। পাশাপাশি দেশে রয়েছে উগ্রবাদীদের চোখ রাঙানি। তাই এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন হচ্ছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে।

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় শোভা পাচ্ছে সর্বমোট ১২টি শিল্প কাঠামো। মূল শিল্প কাঠামোটি হচ্ছে ২৫ ফুট উচ্চতার সূর্যের মুখ। যার একপ্রান্তে আছে হাস্যোজ্জ্বল মুখশ্রী আর অন্যদিকে থাকবে সূর্যের বিপরীতে বীভৎস কদাকার মুখ। শুভ ও অশুভ মানুষের অন্তনির্হিত এই দুই রূপ তুলে ধরা হয়েছে। সে সঙ্গে ছোট ছোট আরো ১৬টি হাস্যোজ্জ্বল সূর্য মুখ থাকবে।

এবার শোভাযাত্রা আবার ফিরে এসেছে সমুদ্রবিজয়ের স্মারক হিসেবে তৈরি করা ময়ূরপঙ্খী নাও। এই শিল্প-কাঠামোটির উচ্চতা ২৫ ফুট। প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঠাঁই পাওয়া হাতি, ঘোড়া, বাঘ ও টেপা পুতুলও স্বরূপে ফিরেছে এবারের আয়োজনে। এ ছাড়া বিশাল কদাকার মুখের এক দানবের শিল্প কাঠামোও নির্মিত হয়েছে, যা দিয়ে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের কুৎসিত মুখটি আবারো তুলে ধরা হয়েছে জাতির সামনে। এ ছাড়া শোভাযাত্রায় শোভা পেয়েছে রাজা-রানির মুখোশসহ নানা অনুষঙ্গ।

এ বছর প্রথমবারের মতো দেশের ৩০ হাজার সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ থেকে বের হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এই শোভাযাত্রা বের করার নির্দেশ দিয়েছে।

এ ছাড়া বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও সকল উপজেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনসহ আলোচনা সভা ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ইউনেস্কো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রাকে স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে গুরুত্বারোপ করে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পয়লা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।