ব্রিটিশ স্কুলগুলোতে মেয়েদের হিজাব নিয়ে ব্যঙ্গ, মুসলিমদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,লন্ডন: ব্রিটিশ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা নিয়ে দেশটির সেকুলার গোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিষয়টির বিরুদ্ধে তারা ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার আয়েশা আলভি বলেন, ‘আমরা কখন ব্রিটিশ হিসাবে স্বীকৃত হব এবং এই সমাজের অংশ হিসাবে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পালনের স্বাধীনতা পাব?’

মুসলিম এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিজাব নিষিদ্ধের জন্য আন্দোলনকারী সেকুলারদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ক সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘অফস্টেট’ এর প্রধান পরিদর্শক আমানদা স্পিলম্যান।

স্পিলম্যান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা হিজাব পরিধানকে যৌন হয়রানি হিসেবে ব্যাখা করার জন্য প্রত্যাশা করছে।’

তিনি বলেন, ‘মেয়েরা কেন এটি পরছে তা নিশ্চিত হতে পরিদর্শকেরা হিজাব পরিহিত শিশুদের সঙ্গে কথা বলবেন।’

সমতার আইন লঙ্ঘনকারী ও স্কুল নীতির ওপর প্রভাব বিস্তারকারী মৌলবাদী গ্রুপের উদ্বেগের বিষয়ে স্কুলে অভিযোগ করার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

স্পিলম্যান বলেন, এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নিলে ‘অফস্টেট’ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবে।’

অভিভাবকেরা যদি মনে করেন যে ছেলে ও মেয়েদের সমতার বিষয়টি স্কুল মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে সেক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানানোর জন্য বাবা-মা ও জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানান স্পিলম্যান।

শিশুদের পোশাক সরকারের ব্যবসা নয় মন্তব্য করে ব্যারিস্টার ও মানবাধিকার কর্মী আলভি রশিদ বলেন, ‘এটি বাবা-মা ও শিশুদের মধ্যে একটি মুক্ত পছন্দ হওয়া উচিত এবং তা একই সঙ্গে ব্যক্তিগত হওয়া উচিৎ। এই ধরনের একটি বিষয়ে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করা উচিৎ নয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘হিজাব পরার জন্য তাদেরকে বাধ্য করা হয় না। বেশিরভাগ মেয়েই নিজেই এটি পরতে পছন্দ করে। আমার পরিবারের আট- নয় বছর বয়সী মেয়েরা মাথায় হিজাব পরতে পছন্দ করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক ইসলামভীতির আরেকটি কারণ হিসেবে দেখছি।’

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমরা কখন ব্রিটিশ হিসাবে স্বীকৃত হব, এই সমাজের অংশ হিসাবে আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পালনের স্বাধীনতা পাব?’

গত সেপ্টেম্বর মাসে ‘টাইমস’ ম্যাগাজিনের পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ১১টি অঞ্চলের ৮০০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মধ্যে অন্তত ১৮ শতাংশ স্কুল হিজাবকে ইউনিফর্মের অংশ হিসেবে অনুমোদন করে।

ন্যাশনাল সেকুলার সোসাইটি (এনএসএস) -এর এক গবেষণায় জানা যায় যে যুক্তরাজ্যের প্রতি পাঁচটি ইসলামি স্কুলের দুটি স্কুলে ইউনিফর্ম হিসেবে হিজাব পরিধানকে অনুমোদন দেয়। এর মানে হল যে, ২৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৪২ শতাংশ ইসলামি স্কুলগুলোতে একটি ইউনিফর্ম নীতি রয়েছে; যেখানে হিজাবকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।