বেসরকারী শিক্ষকদের ৪ দিনের কর্মসুচি ঘোষনা

নিজস্ব প্রতিবেদক,১ মেঃ বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে ১০ শতাংশ হারে অর্থ কেটে আদেশ দিয়েছে সরকার। এর আগে একই আদেশ দিয়ে স্থগিত করার ২ বছর পর পুনরায় গত ১৫ এপ্রিল জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ফলে চলতি মাস থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের মোট ১০ শতাংশ অর্থ কেটে রাখা হবে। এই অর্থ চলে যাবে বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিলে। যে তহবিলের অর্থ পেতে শিক্ষক-কর্মচারীদের দিনের পর দিন অপেক্ষা, হয়রানির শিকার, নাজেহাল ও ঘুষের আশ্রয় নিতে হয়।


শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই নির্দেশনা জারির পর থেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষক সংগঠনগুলো অবিলম্বে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।


এবার এই দাবি আদায়ে ৪ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী জাতীয় পর্যায়ের ১০টি শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ফেডারেশন। গতকাল (সোমবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা করেন বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ফেডারেশনের আহ্বায়ক ও সমন্বয়কারী প্রিন্সিপাল আসাদুল হক। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ২ মে সকল উপজেলায় মানববন্ধন ও দাবির সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল। ৪ মে ঢাকাসহ সকল জেলায় শিক্ষক-কর্মচারী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল। ৯ মে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করবে এবং ২৩ মে ঢাকায় প্রতিনিধি সভা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

৫ দফা দাবি: ১০টি শিক্ষক সংগঠন গতকাল সংবাদ সংম্মেলনে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবির মধ্যে- বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন হতে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা বোর্ড এবং শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বেতন ভাতা প্রদানের পরিবর্তে পূর্ণাঙ্গ পেনশন সুবিধা চালু করতে হবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল, ভাইস-প্রিন্সিপাল, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নতুন নীতিমালা বাতিল করে পূর্বের নীতিমালা বহাল রাখতে হবে। অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী শিক্ষক ও নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করতে হবে। সম্মানজনক বাড়িভাড়া, পূর্ণাঙ্গ উৎসবভাতা ও মেডিকেল ভাতা প্রদান করতে হবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ফেডারেশনের আহ্বায়ক এম এ আউয়াল সিদ্দিকী, হোসনে আরা বেগম, সৈয়দ জুলফিকার আলম চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ ফয়েজ হোসেন, বিলকিস জাহান, মোঃ মহসীন রেজা, সদস্য মোঃ আবু বকর চৌধুরীসহ শতাধিক শিক্ষক নেতা। এদিকে শিক্ষক কর্মচারী অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বিষয়ে আদেশ প্রত্যাহারের জন্য ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষকদের একক ও সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের সাথে সমন্বয় করে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে আগামী ১ মে বুধবার বাদ মাগরিব জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীনের সভাপতিত্বে স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সভা অনুঠিত হবে। উক্ত সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির সকল সদস্য, ঢাকা মহানগরীর ফাযিল-কামিল মাদরাসা প্রধান এবং ঢাকায় অবস্থানরত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে উপস্থিত থাকার জন্য জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী অনুরোধ করেছেন।#

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।