বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে মেধাবীরাই জড়িত

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে জড়িতদের অধিকাংশই মেধাবী। বৈদ্যুতিক ডিভাইস ব্যবহার ও ফাঁস হওয়া প্রশ্ন দ্রুত সমাধানের দক্ষতাকে তারা বিপথে কাজে লাগাচ্ছে।

রাজধানীর পল্টন ও লালবাগ এলাকায় মঙ্গলবার রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে চার যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে আজ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কিছু মেধাবী শিক্ষার্থীর ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে ।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ডিআইজি (ফরেনসিক) রওশন আরা বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাসহ বেশ কিছু পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে অভিনব জালিয়াতি করে আসছে একটি চক্র। তারা বৈদ্যুতিক ডিভাইস ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও চাকরির পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এহসার উদ্দিন চৌধরীর নেতৃত্বে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

photo

গ্রেফতারকৃতরা হলেন ২০১৫ সালের ঢাবির ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন ও কালচার বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মাসুদ রানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড জুয়েল খান, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০২ সালে উত্তীর্ণ ভূগোল বিভাগের ছাত্র কায়সার আলম খোকন এবং ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের অনিয়মিত ছাত্র রাজিদুল শেখ।

অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৫২টি এটিএম কার্ডসদৃশ কমিউনিকেটিং ডিভাইস, ৪৫টি ব্লুটুথ হিয়ারিং ডিভাইস, ৪৭টি সিম, বিভিন্ন কর্মকর্তার নামের সিল, ২টি ডিভাইসযুক্ত কালো রঙের গেঞ্জি, ল্যাপটপ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মার্কশিট, সনদপত্রের ফটোকপি ও জামানতের ১২ লাখ টাকার অগ্রিম চেক জব্দ করা হয়েছে।

রওশন আরা বলেন, চক্রটি প্রথমে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সংগ্রহ করে। তাদের একটি কক্ষে নিয়ে পরীক্ষার হলে কিভাবে ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে তা হাতেনাতে শেখায়। এরপর ভর্তি পরীক্ষার কক্ষে অটো রিসিভ ডিভাইস ও ব্লুটুথ ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করে। বাইরে থাকা প্রশ্ন ফাঁসকারীরা উত্তর পাঠিয় দিলে তা পূরণ করে।

সিআইডির ডিআইজি (ফরেনসিক) রওশন আরা বলেন, এখন পর্যন্ত এই চক্রটি ঢাবিতে তিনজন, জবিতে চারজনসহ ১২ ছাত্রকে অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করিয়েছে।

রওশন আরা বলেন, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তারা এসব করে আসছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেয়ার প্রমাণ আমরা প্রাথমিকভাবে পেয়েছি।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে। এই সিন্ডিকেটের পেছনে কারা কারা জড়িত তাদেরও খুঁজে বের করা হবে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এহসার উদ্দিন চৌধরী।

source: jagonews

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।