পারিবারিক জীবনে নারীই বেশি রোমান্টিক

ডেস্ক nari: কে বেশি রোমান্টিক তুমি না আমি? মান-অভিমানের এমন তর্কের এবার সুরাহা হলো। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে দাম্পত্য-জীবনে রোমান্টিক সম্পর্কের ব্যাপারে নারীরাই বেশি তাড়িত। লন্ডনভিত্তিক জার্নাল ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ গবেষণার এ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোবাইল ফোনে কথা বলা ও খুদে বার্তা পাঠানোর ওপর ভিত্তি করে প্রায় ৩০ লাখ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ওপর গবেষণাটি চালান হয়।

এই গবেষণার মূল লক্ষ্যই ছিল স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক আসলে কত দিন একই থাকে কিংবা তাঁরা আসলে কতটা কাছাকাছি থাকেন এসব প্রশ্নের উত্তর জানা। আর এ গবেষণার দেখা গেছে হলো অন্য কাউকে নয়, স্বামীকেই সবচেয়ে বেশি ফোন করে বিবাহিত নারীরা।

গবেষণায় দেখা গেছে, যুগলবন্দি জীবন পুরুষের চেয়ে নারীর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই দাম্পত্য জীবনকে রোমান্টিক করতে নারীরাই বেশি উদ্যোগী। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, নারীরা যখন দাদি বা নানি হন, তখন স্বামীর প্রতি তাঁদের এই আগ্রহ অনেকটাই ফিকে হতে থাকে। এ সময় নাতি-নাতনিরাই তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পায়।

স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরকে ফোন করার মাত্রা থেকে গবেষকেরা প্রমাণ করেন, পুরুষেরা তাঁদের বিবাহিত জীবনের প্রথম সাত বছর স্ত্রীদের বেশি ফোন করেন। এরপর থেকে তাঁদের মনোযোগ অন্যান্য বন্ধু-বান্ধবদের দিকে ধাবিত হয়।

অন্যদিকে, ৩০-এ পা দেয়ার পর থেকে নারীরা স্বামীর চেয়ে কাছের বন্ধুটির প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে ওঠে। আর ৪৫ বয়সের পর নাতি-পুতিরাই তাঁদের নতুন বন্ধু হয়ে ওঠে। তাই এ সময় বুড়ো স্বামীরা তাঁদের স্ত্রীর কাছ থেকে খুব কমই ফোন পেয়ে থাকেন।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ৩০-এর পরে পুরুষেরা একই বয়সী নারী সঙ্গীর সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন। কিন্তু, সাত বছর যেতে না যেতেই তাঁদের আচরণে পরিবর্তন আসে।

অন্যদিকে, নারীরা ২০ বছর বয়স থেকেই একই বয়সী পুরুষ সঙ্গীকে ভালো বন্ধু হিসেবে দেখতে পছন্দ করে। তবে, ১৫ বছর পর থেকে তাঁদের এই পছন্দের খাতাতেও পরিবর্তন আসতে থাকে।

এ ব্যাপারে গবেষকেরা বলছেন, নারীদের সামাজিক জীবন আসলে একক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খায়। তাই প্রথমে স্বামী, তারপর ছেলেমেয়ে এবং সবশেষে নাতি-পুতির সঙ্গী হয়ে পর্যায়ক্রমে তাঁদের আগ্রহের ক্ষেত্রগুলোতে পরিবর্তন আনেন।

এ গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণের মাধ্যমে অধ্যাপক ডানবার প্রমাণ করতে চেয়েছেন, মানব-সমাজের পিতৃতান্ত্রিক রূপটি ক্রমেই মাতৃতন্ত্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, পুরুষেরা সম্পর্কের ব্যাপারে খুব বেশি অমনোযোগী। তাঁরা উচ্চমাত্রায় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছু বিবেচনা করতে ভালোবাসে। কিন্তু দিন শেষে দেখা যায়, নারীরাই সমাজ কাঠামোকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।