পাঁচ স্তরে ঘুষ

ডেস্ক: সারাদেশের বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির কাজ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে অঞ্চলে অঞ্চলে ভাগ করে সুফলের পরিবর্তে সঙ্কটই বাধিয়ে ফেলেছে শিক্ষা প্রশাসন। এমপিওর সঙ্গে যেন ঘুষ, দুর্নীতিও বিকেন্দ্রীকরণ করে ফেলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি। এমপিওর কাজ হাতে পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাউশির সকল আঞ্চলিক কার্যালয়। একজন শিক্ষককে এমপিও পেতে পাঁচ স্তরে ঘুষ দিতে হচ্ছে। আগে এমপির জন্য কেবল মাউশিতে ঘুষ দেয়া লাগলেও পরিস্থিতি এখন আরও ভয়াবহ। নিয়োগের পর শিক্ষক-কর্মচারীকে ঘাটে ঘাটে ঘুষ দিয়ে ফাইল পার করতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা থেকে জেলা, জেলা থেকে আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস, আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস থেকে মাউশিতে ফাইল আনতেও চলছে একই খেলা।

৬ মার্চ সোমবার ‘পাঁচ স্তরে ঘুষ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে দৈনিক জনকণ্ঠ

এমপিও আঞ্চলিক কেন্দ্রের হাতে দেয়া এবং সেখানে তথ্য যাছাইয়ের কোন সুযোগ না থাকায় সঙ্কট এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বলে বলছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

প্রতিদিনই অভিযোগ আসছে মাউশিতে। অভিযোগ আসছে মন্ত্রণালয়ে। এমপিওর ক্ষমতা মাউশির আঞ্চলিক কেন্দ্রের হাতে দেয়ার পর প্রায় এক বছর হতে চলেছে। এই সময়ে প্রতি মাসের এমপিও প্রদানেই গুরুতর সব দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে মন্ত্রণালয় ও মাউশিতে। গত বছর মাউশির হাতে থাকা এই এমপিও নয়টি আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ে ভাগ করে দেয়া হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল ঘুষ, দুর্নীতি রোধ করা। কিন্তু এক বছরে লক্ষ্য তো পূরণ হয়নি বরং শিক্ষকদের হয়রানি কয়েকগুণ বেড়েছে। বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একজন শিক্ষককে এমপিও পেতে ঘুষ লাগছে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। আর যদি কাগজপত্রে সামান্যতম কোন ঘাটতি থাকে তাহলে ঘুষের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ের উপপরিচালক, জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের ঘুষের প্রমাণ দিয়ে প্রতিদিনই শিক্ষকরা অভিযোগ জমা দিচ্ছেন।

আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ের নয়জন উপপরিচালকের (অঞ্চলের প্রধান কর্মকর্তা) মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধেই কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগ নিয়ে চলছে তদন্ত। দুর্নীতির মাধ্যমে এমপিও প্রদানসহ ‘সাংঘাতিক’ সব অপরাধের প্রমাণ পাওয়ায় আরও চারজন উপপরিচালকসহ ১৪

কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করতে মাউশিকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই এমপিও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন আঞ্চলিক শিক্ষা কার্যালয়ের চারজন উপপরিচালক (ডিডি), চারজন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও ছয়জন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে মন্ত্রণালয়ের আদেশ পেয়েও মাউশির একটি চক্র অপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। গায়েব করে ফেলা হয়েছে ফাইল। যা যানেন না খোদ মহাপরিচালকও।

সুত্র: দৈনিক জনকন্ঠ

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।