যশোর : যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাঈমা আক্তার দেড় মাসের ছুটি নিয়ে স্ব-পরিবারে বিদেশ গিয়ে আর ফেরেননি। এক বছর পার হতে চললেও তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি। এমনকি কাউকে ফোনও করেছেন। বিষয়টি জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মিজানুর রহমান।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র মতে, এমএম কলেজের শিক্ষিকা নাঈমা আক্তারের শ্বশুরবাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে। তার স্বামী খন্দকার রোকনুদ্দিন ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক। এক বছর আগে তারা স্বামী-স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ পাঁচ সদস্যর পরিবার দেশত্যাগ করেন। এরপর আর ফেরেননি।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ‘দেশ ছাড়ার পর পরিবারকে ফোন করে তারা বলেছিলেন- আমরা একটি মুসলিম দেশে আছি, ভালো আছি। আমরা আর কোনোদিন বাংলাদেশে ফিরব না।
রামপুরা থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গত বছরের ১০ অক্টোবর তারা দেশ ছেড়ে চলে যায়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ধারণা করছি, তারা সিরিয়া চলে গেছে।’
সিরিয়া ও ইরাকের একটি অংশজুড়ে শরিয়াভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে কাজ করছে ইসলামিক স্টেট (আইএস), বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলায় যে সংগঠনটির নাম আসছে।
ওই পরিবারটি আইএস’এ যোগ দিয়েছে কি না তা নিয়েও সন্দেহ জাগছে অনেকের মনে। বিশেষ করে এমএম কলেজের শিক্ষিকা নাঈমা আক্তারের পরিবার হওয়ায় এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয় সূত্র মতে, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাঈমা আক্তার ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে যশোর সরকারি এমএম কলেজে বদলি হন। এরপর ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ৪৬ দিনের ছুটি নিয়ে বিদেশ যান। পরে আর দেশে ফিরেননি।
ওই সময়ে এমএম কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা প্রফেসর নমিতা রাণী বিশ্বাস জানান, গত বছরের মাঝমাঝি হজে যাওয়ার জন্য ছুটির আবেদন করেছিলেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাইমা আক্তার। শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রক্রিয়া শেষে ছুটি মঞ্জুর হতে হজের সময় পার হয়ে যায়। তখন তিনি বলেন বিদেশ ভ্রমণে যাবেন। সে অনুযায়ী ছুটি নিয়ে বিদেশে যান।
তিনি বলেন, ‘ছুটি শেষে নাঈমা আক্তার দেশে না ফেরায় আমি অধ্যক্ষ হিসেবে তখন শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে মৌখিকভাবে অবহিত করেছিলাম। পরবর্তীতে মহাপরিচালককে লিখিতভাবেও জানানো হয়। পরে আমি অবসরে চলে এসেছি। আর বেশি কিছু জানি না।
by