দামুড়হুদায় যুবলীগ ক্যাডারের হাতে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্Chuadanga Damurhuda Pic_30.03.16 (5)গার দামুড়হুদা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলামকে যুবলীগ ক্যাডার মশিউর রহমান রানা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। এছাড়া চাঁদা দাবি ও বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়েছেন।

এর প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় ৩ শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা মৌন মিছিল ও মানব বন্ধন করেছেন।

এব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলাম বাদী হয়ে রানা (৩২) ও রানার শ্বশুর আরিফুর রহমানের (৫৫) নামে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে।

রানা উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ও তার শ্বশুর আরিফুর রহমান একই গ্রামের মৃত. বজলুর রহমানের ছেলে।

বুধবার সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত রানাকে এক বছরের কারাদ-সহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদ-ের আদেশ দিয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ফকির পাড়া গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী মতিয়ার রহমানের ছেলে রানা ও তার শ্বশুর একই গ্রামের মৃত. বজলুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান প্রায়ই দামুড়হুদা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলামকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে অনৈতিক সুবিধা আদায় করার জন্য হুমকি ধামকি দেয়। অনৈতিক সুবিধা না দিলে চাঁদা দিতে হবে বলেও ভয় ভীতি দেখিয়ে আসছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্তরে অবস্থিত খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে সরকারি কাজে কর্মরত অবস্থায় থাকা খাদ্য কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলামকে রানা ও তার শ্বশুর আরিফুর অফিসে ঢুকে লোহার রড, মাটির ফুলদানি ও কাঠের রোলার দিয়ে মার ধোর শুরু করে এবং টেলিফোন, আসবাব পত্র ভাঙচুর ও ফাইল পত্র তছনছ করে তারা চলে যায়।

এরই এক পর্যায়ে খাদ্য কর্মকর্তা মোফাক্ষারুল ইসলাম জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এসময় অফিসের অন্য কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

এই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান উপজেলার সকল দপ্তরের প্রায় ৩ শতাধিক কর্মকর্মা কর্মচারীদের একত্রিত করে দুপুর ২ টায় পরিষদ চত্তর থেকে মৌন মিছিলসহকারে বের হয়ে পরিষদের সামনে দামুড়হুদা-মুজিবনগর মহাসড়কে প্রায়ঘণ্টা ব্যাপী মানব বন্ধন করেন।

এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তার প্রতি যে সন্ত্রাসী আক্রমণ হলো আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। যাতে করে ভবিষ্যতে আর কোন সরকারি কর্মকর্তাকে এখাবে সন্ত্রাসীরা লাঞ্ছিত করতে না পারে।

তিনি আরো বলেন, আজ আমরা মানব বন্ধন করলাম। এতে কোন কাজ না হলে আমরা আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।

এরপর বিকেল ৫ টার দিকে দলীয় নেতারা রানাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমানের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে দঃবিঃ ১৮৯, ৩৫৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১ বছরের কারাদ-সহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদ-ের আদেশ দেন।

আদালতের আদেশের পর পরই সন্ধ্যা ৬ টার দিকে রানাকে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশ চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে সোপর্দ করে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।