দর্শনায় অবৈধ কোচিং ক্লাস নেয়ার সময় ৯ শিক্ষক হাতেনাতে ধৃত ।সম্পদের ক্রয় উৎসের তদন্তের দাবী

লিয়াকত হোসেন লিটন, দর্শনা থেকে,২১ ফেব্রুয়ারী  : চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় অবৈধ কোচিং বাণিজ্য হাতেনাতে ধরতে জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে দর্শনা বালিকা বিদ্যালয় ও কেরু উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধ কোচিং ক্লাস নেয়া অবস্থায় ধরা পড়েছেন ৯ শিক্ষক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে তথ্য প্রমাণাদি শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক।  যে সকল শিক্ষকেরা শিক্ষা মেধা নিয়ে ব্যবসা করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সে সব সম্পদের ক্রয় উৎস ও সংশ্লিষ্টদের আয়ের উৎস বিষয়ে তদন্ত হওয়া দরকার বলে মনে করেন অভিভাবকরা।

জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে গতকাল সোমবার বিকেলে একটি প্রতিনিধি দল অবৈধ কোচিং বাণিজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালান দর্শনা কেরুজ উচ্চ বিদ্যালয় একই শহরের বালিকা বিদ্যালয়ে।
প্রথমে দর্শনার বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দেখেন চারটি আলাদা কক্ষে অবৈধ ভাবে প্রায় ১শ’ শিক্ষার্থীদের কোচিং ক্লাস নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক একেএম হুমায়ন কবির, সহকারী প্রধান শিক্ষক হাসমত আলী, সহকারী শিক্ষিকা নাসরিন আক্তার শিলু ও সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান হাফিজ ।

এর পর প্রতিনিধি দল যান দর্শনা কেরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে দেখন ৩শ’ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে কোচিং ক্লাস নিচ্ছেন সহকারী শিক্ষক ইকবাল রেজা, আশরাফ হোসেন, স্নেহ বসাক নান্টু, ফারুক হোসেন ও আসমা খাতুন।

উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের দেখে অস্বস্তিকর দুরবস্থার মধ্যে পড়েন ওই সকল কোচিং বাবু খ্যাত অর্থলোভী শিক্ষকেরা। এসময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোচিং কারা নেয় এবং কিভাবে নেয়, কত টাকা করে নেয় এসব বিষয় বিস্তারিত শোনেন এবং ভিডিও রেকর্ড করে নেন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত কোচিং করা বাবদ ৭শ’ থেকে এক হাজার টাকা টাকা দিতে হয় তাদের।
পরে প্রতিনিধি দল তথ্য প্রমাণাদি নিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দেন। জেলা প্রশাসক কোচিং ক্লাসে হাতেনাতে ধরাপড়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেন।

অভিযানে ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই উপ-পরিচালক জাফর ইকবাল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাপিয়া আক্তার, ইফফাত আরা জামান উম্মি ও চৌধুরী মোস্তাফিজুর রহমান।

এদিকে, দর্শনাবাসী এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কোচিং বাণিজ্যের সাথে শুধু বালিকা ও কেরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ই না, মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণচাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকও রয়েছেন। তাদের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা দরকার। আর কোচিং বাবুখ্যাত অর্থলোভী যে সকল শিক্ষকেরা শিক্ষা মেধা নিয়ে ব্যবসা করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সে সব সম্পদের ক্রয় উৎস ও সংশ্লিষ্টদের আয়ের উৎস বিষয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।