জামালপুরে শিক্ষার্থীদের পিঠে আ.লীগ নেতা : তদন্ত কমিটি

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় ছাত্রদের পিঠের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন বিদ্যালয়ের জমিদাতার ছেলে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দিলদার হুসেন প্রিন্স। গত ২৯ জানুয়ারি ওই উপজেলার মাহমুদপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক বিদায় অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক।

২৯ জানুয়ারি মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান ছিল। এই অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের স্কাউট দলের সদস্যরা একটি মানবসেতু নির্মাণ করে।

সেই মানবসেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে যান অনুষ্ঠানের অতিথি এবং বিদ্যালয়ের জমিদাতার ছেলে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দিলদার হুসেন প্রিন্স। এ সময় সেই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করার পাশাপাশি তাকে হেঁটে যেতে সাহায্য করেন ওই বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক হাফিজুর রহমান।

বিদ্যালয়ের স্কাউট সদস্যদের মানবসেতুর উপর দিয়ে কোনো শিক্ষার্থীর পরিবর্তে দিলদার হুসেন প্রিন্সের হেঁটে যাওয়ার ঘটনাটি স্থানীয়দের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে এবং ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।

দিলদার হুসেন প্রিন্সের ভাই জানান, বিদ্যালয়ে এই প্রথা অনেকদিন থেকেই চলে আসছে। সেদিন তার ভাই উপস্থিত না থাকলে অন্য কেউ ওই মানবসেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে যেতো।

এ ব্যাপারে মাহমুদপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক হাফিজুর রহমান এ ঘটনায় তার ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান মো. আছানতুজ্জামান জানান, বিষয়টি সুরাহার জন্য তিনি ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করছেন।

জামালপুর জেলা শিশু সুরক্ষা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম জানান, শিক্ষার্থীদের পিঠের ওপর দিয়ে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের হেঁটে যাওয়ার ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যক্কারজনক। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা না নেয়া হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনে যাবেন তারা।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, শিক্ষার্থীদের পিঠের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। পুলিশ সুপারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলেছি। এছাড়াও ঘটনা তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।