সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘোষণা’ বাস্তবায়নে কমিটি করার কথা থাকলেও তা কবে হবে, তার কোনো ধারণা দিতে পারেননি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক।
বিডি নিউজ: কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের ফের আন্দোলনে নামার বিষয়টি জানেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেছিলেন, কোটা পদ্ধতিই থাকবে না, এটা ‘বাতিল’।
একইসঙ্গে ওই দিনই কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও বলেছিলেন, যে কমিটি পরবর্তী সুপারিশ করবে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করলেও তাতে কোনো অগ্রগতি না দেখে ফের আন্দোলনে নামে সম্প্রতি। এর মধ্যে শনিবার তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে তাদের মারধর করে একদল ছাত্রলীগকর্মী। রোববার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানকে।
রোববার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরার কাছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নতুন করে আন্দোলনে নামার বিষয়টি সংবাদপত্রে দেখেছেন তিনি।
তার মতামত জানতে চাইলে ইসমাত আরা বলেন, “(কোটা নিয়ে) প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তার বাইরে আমার বলার কিছু নেই।”
প্রধানমন্ত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে যে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তার কোনো অগ্রগতি আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, বলেছিলেন, সেটা (কমিটি) হবে।”
কবে নাগাদ কমিটি হতে পারে- সেপ্রশ্নে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আপনাকে আমি কোনো আপডেট দিতে পারছি না। কমিটি হবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমিটি হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর কোটা সংস্কারে কমিটি করা হচ্ছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান বার বার বলে আসছিলেন।
গত ৮ মে মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল বা সংস্কার করতে একটি কমিটি গঠনের রূপরেখা ওই দিন সকালেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে ওই দিন মোজাম্মেল বলেছিলেন, কমিটির সদস্য ৪ থেকে ৫ জন হতে পারে।
তারপর আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। সরকারি প্রজ্ঞাপন না পেয়ে ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ফের আন্দোলন শুরু করেছে।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবি তুলেছিল। কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে তা পূরণের দাবিও জানিয়েছিল তারা।