কেন হাঁটবেন কখন হাঁটবেন

শরীর ঠিwalking-4ক রাখতে হলে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। কিন্তু সব ব্যায়াম সব বয়সের জন্য উপযোগী নয়। কিন্তু হাঁটা এমন একটি ব্যায়াম যা সব বয়সের জন্যই চলে। এর উপকারিতাও অনেক। হাঁটা নিয়ে হয়েছে বিস্তর গবেষণা। গবেষণালব্ধ ফলাফল চমকপ্রদ। হাঁটার মতো ভালো ব্যায়াম আর নেই। তবে যারা নিয়মিত হাঁটাচলার মধ্যে থাকেন, তাদের আলাদা ব্যায়ামের দরকার হয় না। সমস্যা হয় যারা সারা দিন অনেকক্ষণ ধরে এক জায়গায় বসে কাজ করেন। তাদের কিন্তু কিছু সময় হলেও একটু একটু করে ব্যায়াম করা দরকার। শীতকালে এটা আরও বেশি জরুরি। এর ফলে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে, আর ডায়াবেটিস, হূদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটলে আর শরীরের ওজন ৭ শতাংশ কমালে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে প্রায় শতকরা ৫৮ ভাগ। আর যদি ডায়াবেটিস হয়েই থাকে তবে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও হাঁটা বিশেষ কার্যকর। শরীরের পেশিতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে হাঁটাহাঁটি করলে। ফলে রক্তের গ্লুুকোজ কমে আর ডায়বেটিসের ওষুধ লাগে কম। নিয়মিত হাঁটলে শরীরে জমে থাকা মেদ কমে। পক্ষান্তরে ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়ে। আর কমে যায় মন্দ কোলেস্টেরল বা এলডিএল। ফলে রক্তনালিতে সহজে ব্লক হয় না, রক্তনালির দেয়াল শক্ত হয়ে যায় না। তাই উচ্চরক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। আর উচ্চরক্তচাপ আগে থেকেই থেকে থাকলে তাও থাকে নিয়ন্ত্রিত। নিয়মিত হাঁটলে রক্তনালির দেয়ালে চর্বি জমে কম। ফলে রক্তনালি সরু হয় না। তাই হূদরোগের কারণে মৃত্যুঝুঁকি কমে প্রায় ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ। কমে যায় স্ট্রোকের ঝুঁকিও। এছাড়া ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমে শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ। দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কমে কোলন বা বৃহদন্ত্রের ক্যান্সারের সম্ভাবনা। নিয়মিত হাঁটাচলায় মস্তিষ্কে নিঃসরণ হয় ভালোলাগার কিছু রাসায়নিক পদার্থ, যেমন এনডর্ফিন, ডোপামিন, সেরোটোনিন। ফলে মন মেজাজ থাকে ভালো। হাঁটার সময় হূদস্পন্দন আর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বাড়ে। বাড়ে এ দুটি ভাইটাল অঙ্গের রক্ত সরবরাহ। হাঁটার ফলে পেশিতে রক্ত সরবরাহ বাড়ে। পেশিরশক্তি বাড়ে। শরীরের ওজন কমে থাকে গ্রহণযোগ্য। আর শরীর থাকে ফিট। নিজেকে মনে হবে বেশি শক্তিশালী। সার্বিকভাবে বেড়ে যাবে শরীরের কর্মক্ষমতা। হাঁটার উপকার পেতে অবশ্যই সপ্তাহে অন্তত তিন বা চার দিন হাঁটতে হবে, হাঁটতে হবে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ধরে। সম্ভব হলে হাঁটতে হবে যথেষ্ট দ্রুতগতিতে যেন শরীরটা একটু ঘামে।
হাঁটার ব্যাপারে কিছু টিপস : হাঁটা শুরু করার প্রথম ৫-১০ মিনিট এবং শেষের ৫-১০ মিনিট আস্তে হেঁটে আপনার শরীরকে ওয়ার্ম আপ ও ওয়ার্ম ডাউন করুন। হাঁটার আগে ও পরে একটু পানি পান করুন। খাওয়ার পরপরই হাঁটবেন না। ৪৫ মিনিট থেকে ৬০ মিনিট অপেক্ষা করুন। দুপুরের ভরা রোদে হাঁটবেন না। সকাল বা বিকালের একটি সময় বেছে নিন। হাঁটা শেষ করে এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে কিছু খেয়ে নিন। সুতরাং সুস্থ থাকতে নিয়মিত হাঁটুন।
ডাঃ স্বরুপ দাস
ডিএইচএমএস (হোমিও)

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।