কান ধরে উঠবস করানো সভ্য সমাজ ও সংবিধানের সরাসরি পরিপন্থী-ডঃ কামাল

নিজস্ব প্রতিdr.kamalবেদক : নারায়ণগঞ্জে সংসদ সদস্যের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সবপক্ষের আইনজীবীরা। সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন এই ঘটনাকে সংবিধান পরিপন্থী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অপরদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি জানিয়েছে, নির্যাতনের শিকার শিক্ষক চাইলে তারা আইনি সহায়তা দেবেন তারা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে পৃথক পৃথক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন আইনজীবী নেতারা।

এক মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়ায় ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘কান ধরে উঠবস করানো সভ্য সমাজ ও সংবিধানের সরাসরি পরিপন্থী। এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। এ ধরনের আচরণ কল্পনা করা যায় না।’ ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘কেউ কোনো অপরাধ করলে তার বিচারের জন্য দেশে আইন আছে। ওই আইনে তদন্ত হয়, তদন্ত শেষে বিচার হয়। কিন্তু বিচারের আগেই ওই শিক্ষককে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এভাবে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না।’ অপরদিকে এক সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক শ্যামলকান্তিকে কান করে উঠ-বস করিয়ে শুধু তাকে অপমানিত করা হয়নি, ওই দৃশ্য দেখে দেশবাসীও অপমানিত হয়েছেন।

এই ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে যে সব ব্যক্তি সম্পৃক্ত, তাদের সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’ নির্যাতিত শিক্ষককে আইনি সহায়তা প্রদানের ঘোষণাও দেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদের এই সদস্য। তিনি বলেন, ‘এ নির্যাতনের ঘটনায় মানহানির মামলা হতে পারে। যদি শ্যামলকান্তি আইনি সহায়তা চান, তাহলে স্বপ্রণোদিত হয়ে সহায়তা দেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব বারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, কোষাধ্যক্ষ রমজান আলী সিকদার, সহ-সম্পাদক একেএম রবিউল হাসান সুমন, সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার পিয়ার সাত্তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামলকান্তি ভক্তকে ছাত্র মারধর ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে কান ধরে উঠবস করান সাংসদ সেলিম ওসমান। এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠলেও ১৬ মে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। বুধবার এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে তদন্তের পর বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বাতিল ও শিক্ষককে পুনর্বহালের ঘোষণা দেন।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।