কলাপাড়ায় সন্ত্রাসীদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত, গ্রেফতার ৫

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥ বরিশাল শের-ই-বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওরফে শাহআলম মাস্টারের বাম পা গোড়ালি পর্যন্ত কেটে ফেলেছে। এসময় তাকে বেধড়ক কোপানো হয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব মোস্তফাপুর গ্রামে দরবেশ বাড়ির সামনের সড়কে শনিবার সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। মুমুর্ষ অবস্থায় গ্রামের লোকজন শাহআলম মাস্টারকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে নেয়।

সেখান থেকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শাহআলম মাস্টার জানান, নজরুলের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী তকে অনুসরন করে হত্যার জন্য এমন হামলা চালায়। কলাপাড়া থানার ওসি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাতক্ষণিক জড়িত সন্দেহে একই এলাকার রহিম খোকন, সাঈদুর রহমান সাইদ, মাহাদী হাসান, তাইফুল ও মোঃ হোসাইনকে গ্রেফতার করেছে। এসময় শত শত মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ জানায়। এ ঘটনার জের ধরে পাল্টা হামলার শঙ্কা করছেন স্থানীয় মানুষ। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ ও আহতের স্বজনেরা জানান, বরিশাল শেরে বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহ আলম হাওলাদার শনিবার সকালে শিশু ছেলে আফ্রিদিকে নিয়ে পূর্ব মোস্তফাপুর গ্রামে বোন জামাই মকবুল মাস্টারের বাড়িতে কোরবানির দাওয়াত খেতে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা সশস্ত্র ১০-১২ সশস্ত্র সন্ত্রাসী অতির্কিত হামলা চালায় তার ওপর। সন্ত্রাসীরা তার শিশুসন্তানের সামনে বাম পায়ের গোড়ালির উপর দিয়ে কেটে ঝুলিয়ে দেয়। ডান পা, দুই হাত ও মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ১০-১২ মিনিট ধরে সন্ত্রাসীদের নৃশংস তান্ডব চলে। এ সময় শাহ আলম মাস্টার ও তার শিশুপুত্রের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়ে। কলাপাড়া হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শংকর কুমার পাল জানান, আহত শাহ আলমের বাম পায়ের ৯০ ভাগ কেটে ফেলা হয়েছে। এ কারনে পা রক্ষা করা অসম্ভব। শরীরেও ধারালো অস্ত্রের কোপের একাধিক জখম রয়েছে।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, স্থানীয় বাদশা মেম্বার-আইয়ুব আলী গ্রুপের সঙ্গে শাহআলম মাস্টার গ্রুপের দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরে প্রচন্ড বিরোধ রয়েছে। ইতোপুর্বে এরা একে অপরের ওপর অন্তত ১২/১৩ বার সশস্ত্র হামলা-পাল্টাহামলার ঘটনা ঘটায়। তিনি এও জানান, আহত শাহআলম মাস্টারের বিরুদ্ধে অন্তত দেড় ডজন মামলা রয়েছে।

তবে এ ঘটনায় জড়িতদের বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। নীলগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নাসির মাহমুদ জানান, এরা উভয়গ্রুপ বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক নেতাকর্মী। এদের বছরের পর বছর ধরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নীলগঞ্জের মানুষ রয়েছে আতঙ্কে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।