এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৮ পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক : এসএসসির প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাই আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে আট পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রোববার বিকেলে জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রশ্নপত্র সুরক্ষা এবং ফাঁস রোধে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

সভায় উপস্থিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রশ্ন ফাঁস রোধে মোট আটটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-কেন্দ্রের মধ্যে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ। কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা মোবাইল সঙ্গে আনলে ১৪৪ ধারার বে-আইনি কর্মকাণ্ডের অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দুইয়ের অধিক সেট প্রশ্ন ছাপানো হয়েছে। পরীক্ষার ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্নের সেট নির্ধারণ করা হবে। এরপর তা কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেয়া হবে।

এখন থেকে প্রশ্নপত্র দুই প্যাকেটে যাবে। এরমধ্যে ভেতরের প্যাকেট থাকবে সিলগালা। বাইরের প্যাকেট থাকবে বিশেষ সিকিউরিটি কোডের টেপ লাগানো। এছাড়াও এসএসসির মতো এইচএসসিতেও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে হলে প্রবেশ করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হবে না। যদি বিশেষ কারণে কোনো পরীক্ষার্থীর দেরি হয়, তবে রেজিস্ট্রার খাতায় পরীক্ষার্থীদের সব তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে। একাধিক দিন এমন হলে আর তাকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এসব তথ্য কেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট বোর্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রশ্ন ফাঁস এবং নকলে সহায়তার দায়ে চিহ্নিত সরকারি কলেজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলাসহ নেয়া হবে বিভাগীয় প্রক্রিয়া (ডিপি)। আর বেসরকারি কলেজ শিক্ষকের ক্ষেত্রে এমপিও বাতিলসহ চাকরিচ্যুত করা হবে।

চাকরিচ্যুতির জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজ-মাদরাসা পরিচালনা কমিটিকে (জিবি) বলা হবে। তারা ব্যবস্থা না নিলে জিবি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। এরপর সেই কমিটির মাধ্যমে চাকরিচ্যুতি নিশ্চিত করা হবে।

প্রশ্নপত্র ট্রেজারি থেকে বের করে কেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। পরীক্ষা কেন্দ্রের দূরত্ব অনুযায়ী ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হবে। এছাড়া এবারই প্রথম বারেরমতো পরীক্ষাকালীন বিকাশ, রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকিং কঠোর নজরদারিতে থাকবে। সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ করে নিকটস্থ থানায় অবহিত করতে হবে।

নতুবা সংশ্লিষ্ট এজেন্টের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থাকবে নজরদারিতে। উপজেলা সদরের বাইরে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের উপজেলার কেন্দ্রগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে ওইসব কেন্দ্রও থাকবে বিশেষ নজরদারিতে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এতে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান এবং বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরাও বক্তৃতা করেন।

উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা। চলবে ১৪ মে পর্যন্ত। আটটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, একটি কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা পরিচালিত হবে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।