ইবিতে খাবার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৭

মহান বিজয় দিবসের খাবার নেওয়াকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে সাদ্দাস হোসেন হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

এতে সভাপতি গ্রুপের অন্তত ৭ কর্মী আহত হয়। আহতদেরকে তাৎক্ষনিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।এদিকে ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ঘটনাস্থলে আসলে ছাত্রলীগের এক কর্মী তাকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিজয় দিবস উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নতমানের খাবারের আয়োজন করে। বেলা দুইটার দিকে সাদ্দাম হোসেন হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ শুরু করে হল প্রশাসন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাস গ্রুপের কর্মী ও সাদ্দাম হলের সহ সভাপতি খন্দকার নওশাদ ২৫-৩০ জন ছাত্রলীগ কর্মী ও বহিরাগদের নিয়ে খাবার নিতে আসে।

পরে আড়াই টার দিকে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গ্রুপের নেতা ও সাদ্দাম হলের সভাপতি মেহেদী হাসান নাঈম এবং খাবার বিতরণকারী সেচ্ছাসেবকদের সাথে খাবার নেওয়াকে কেন্দ্র করে সম্পাদক গ্রুপের কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে সাংগঠনিক সম্পাদক তৌকির মাহফুজ মাসুদ, নওশাদ, উজ্জল হোসেন ডলার, সুজয় কুমার, সাকিল আহম্মেদ সুমনসহ ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী ও বহিরাহতরা সভাপতি গ্রুপের কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এতে সভাপতি গ্রুপের অন্তত ৭ কর্মী আহত হয়। এরা হলেন, জসিম (হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ), নীল (হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ), জাকির, মিজান, আশিক, হৃদয় (পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ), হিমেল। আহতদের মধ্যে জসিম ও মিজানের অবস্থা আশংকাজনক। সংঘর্ষের সময় খাবার নিতে আসা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভয়ে দিকবিদিক ছুটতে থাকে। অন্যদিকে সংঘর্ষের ঘটনা শুনে সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ কর্মী সাদ্দাম হলে আসেন। পরে আহতদেরকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জসিম ও মিজানকে আশংকাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেন। এসময় আরিফুল ইসলাম নামের এক কর্মী প্রক্টরকে লাঞ্চিত করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান নাঈম বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মীরা বহিরাগতদের নিয়ে টোকেন ছাড়াই খাবার নেওয়ার চেষ্টা করছিল। এটা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী বাধা দিলে সেক্রেটারী গ্রুপ আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ’

সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের খন্দকার নওশাদ কবির বলেন, ‘আমরা খাবার নিতে গেলে হল সেক্রেটারি সাগর বহিরাগতদের নিয়ে আমাদের ডাইনিং রুম থেকে বের করে দেয় এবং খারাপ আচরণ করে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। ’

সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাস বলেন ‘বিষয়টি নিয়ে সভাপতির সাথে কথা বলে দলীয় ভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খাবার নিয়ে কর্মীদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়েছে। ঘটনাটি শুনার সাথে সাথে ঘটনাস্থালে এসে মিমাংসা করেছি। ’

শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের সাথে বহিরাগতরা থাকায় এমনটি হয়েছে। পরে আমি বিষয়টি ঠিক করে দিয়েছি। ’

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।