প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতি গণশিক্ষা সচিবের আহ্বান

ডেস্ক:
বেতন-বৈষম্য নিরসনের দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাচ্ছেন সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে চার লাখ শিক্ষক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের মোট ১৪টি সংগঠন মিলে সম্প্রতি গঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’। এই পরিষদের মাধ্যমে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।


এদিকে আগামী মাসে ১৭ নভেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা। ইংরেজি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ পরীক্ষা। ২৪ নভেম্বর গণিত পরীক্ষা আয়োজনের মাধ্যমে শেষ হবে এ পরীক্ষা। পরীক্ষার আর দেড় মাস মাত্র বাকি। এ মুহূর্তে শিক্ষকরা বিদ্যালয় বন্ধ করে লাগাতার ধর্মঘটে গেলে শিশু শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। তাই দ্রুত সরকারকে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন দেয়ার দাবিতে আগামী ১৪ অক্টোবর সারাদেশের প্রায় ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হবে। পরদিন ১৫ অক্টোবর পালন করা হবে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি। তার পরের দিন ১৬ অক্টোবর এসব বিদ্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা। ১৭ অক্টোবর পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাবেন তারা। এরপরও দাবি আদায় না হলে ২৭ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশ করা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি চলবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন জানান, শিক্ষকদের বেতন-বৈষম্য কমাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তারা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা শতভাগ আন্তরিক এ বিষয়ে। তবে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের কোনো ক্ষতি হয়, এমন কোনো কর্মসূচি শিক্ষকদের না দেয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তাদের দাবির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আবারো চূড়ান্তভাবে জানানো হবে বলে তিনি জানান।

এর আগে গত ২৯ জুলাই এই শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর এই প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৮ সেপ্টেম্বর তা নাকচ করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর সারাদেশের শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে এই আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

বর্তমানে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৯০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোতে তিন লাখ ২৫ হাজার সহকারী শিক্ষক ও ৪২ হাজার প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বেতন নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে সহকারী শিক্ষকদের ভেতরেও।


Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।