দেশের সব ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের তথ্য নেবে সরকার

রঞ্জিত ভট্রা:  বাংলাদেশে বর্তমানে শতাধিক ইংলিশ মিডিয়াম তথা ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। এর তালিকা শিক্ষা অধিদফতরে থাকলেও অন্য কোনও তথ্য নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লেকহেড গ্রামার স্কুল বন্ধ ঘোষণার পর নড়েচড়ে বসেছে মন্ত্রণালয়। তারা এখন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কারা কিভাবে চালাচ্ছে সেই তথ্য সংগ্রহ করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এ প্রসঙ্গে মাউশি পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের কাছে শতাধিক স্কুলের তালিকা রয়েছে। প্রয়োজনে অন্য তথ্যও সংগ্রহ করা হবে।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অনুমোদন দিয়ে থাকে শিক্ষা বোর্ড। এরপর অনুমোদিত স্কুলের তথ্য পাঠানো হয় মাউশির কাছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১০০টির বেশি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। তবে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর নতুন স্কুল অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নিবন্ধন নিতে চলতি বছরের জুলাই মাসে বিধিমালা জারি করা হয়। এসব কারণে নতুন ইংরেজি মাধ্যম স্কুল খোলার জন্য অনেক ব্যক্তি বা সংস্থা অনুমোদন পেতে সরাসরি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, লেকহেড স্কুল বন্ধের পর ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর তথ্য থাকা জরুরি বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়। বিচ্ছিন্নভাবে তথ্য থাকায় জটিলতাও দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করছেন এর কর্মকর্তারা।

এতদিন শিক্ষা বোর্ড, মাউশি ও মন্ত্রণালয়ের কাছে গুরুত্ব পায়নি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। তবে জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের কারণে বদলে গেছে চিত্রটা। এখন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে মন্ত্রণালয় ও মাউশি।

লেকহেড স্কুল বন্ধের পর গত ১৪ নভেম্বর শিক্ষা অধিদফতরে ৩৫টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন মাউশি মহাপরিচালক। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। বৈঠকে তিনি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর ওপর নজরদারির নির্দেশ দেন মহাপরিচালককে। শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার বিষয়েও গুরুত্ব দেন তিনি। এছাড়া ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার ছাড়া ছাত্রছাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে স্কুলে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মাউশি সূত্র জানিয়েছে, হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ স্কুলের নিজস্ব কোনও বাস নেই। অথচ রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের অনেকদূর থেকেও স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। এক্ষেত্রে দুর্ভোগ পড়ে তারা। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব স্কুল বাস চালুর নির্দেশ দিতে ওই বৈঠকে বলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা।

এ বছর ইংরেজি মাধ্যমের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন বিধিমালা-২০১৭ জারি করে সরকার। বিধিমালা অনুযায়ী, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল পরিচালনা করতে হলে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। দুই ধাপে স্কুলের অনুমোদন দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে প্রথমে দুই বছরের জন্য প্রাথমিক অনুমোদন নিতে হবে। সন্তোষ জনক ভাবে স্কুল পরিচালিত হলে পরবর্তী সময়ে ভিন্ন ফরমে নবায়নের আবেদন করতে হবে। নবায়নে তিন বছরের অনুমোদন দেওয়া হবে। প্রতি তিন বছর পর পর অনুমোদন নবায়ন করতে হবে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।