জাতীয়করন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক সমন্বয়ের দাবী

হাজারো সমস্যার আবর্তে  বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ২০১৩ সালের শুরুতে একটি বড় আনন্দের সংবাদ পেলেন। গত ৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানা ধরনের ২৬ হাজার ২০০টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকারি মূল বেতনের পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধাদিও পাবেন। শিক্ষকদের ব্যক্তিগত সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তের ফলে বিদ্যালয়গুলোও নানভাবে আগের চেয়ে উপকৃত হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো মধ্যকার যে দূরত্ব ছিল, তা পুরোপুরি দূর হবে। এর ফল হিসেবে আশা করা যেতে পারে যে, বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর জাতীয়করণের ফলে সরকারি নানা সুবিধা পাওয়ার পর সেগুলোর গুণগত মান বর্তমানের চেয়ে অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। তবে শিক্ষক সমন্বয় না হলে জাতীয়করনকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার গুনগত মান কোনক্রমেই বৃদ্ধি করা যাবে না বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে অনেক বেশি বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। এটিকেও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর পিছিয়ে থাকার একটি কারণ হিসেবে মনে করা হয়। তবে সব চেয়ে বড় কারণ সম্ভবত শিক্ষকদের মানসিকতার মধ্যেই লুকায়িত থাকে। শিক্ষকরা কিন্তু চাইলে তাঁদের বিদ্যালয়ে পড়ালেখার মান বাড়াতে পারেন- সেজন্য অন্য কারো মুখাপেক্ষী হতে হয় না।
অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষককে দেরিতে এসে আগে চলে যেতে দেখা যায়, অনেকে ঠিকমতো ক্লাশ নেন না, অনেকক্ষেত্রে তাঁরা শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেন না, শিক্ষক নিজে যা জানেন তাও ঠিকমতো শিক্ষার্থীদের কাছে সঞ্চারিত করতে চান না।
একজন শিক্ষক যদি চান তাঁর শিক্ষর্থীদের উপযুক্তভাবে গড়ে তুলতে, তাহলে শত বাধাও তাঁকে দমাতে পারবে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেরকমভাবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে কতো শতাংশ আন্তরিকভাবে কাজ করেন, সেটি একটি বিরাট প্রশ্ন। অন্য আট-দশটি পেশার মতো শিক্ষকতা নিছকই একটি পেশা নয়, এর সঙ্গে নানা অনুষঙ্গ জড়িত। একজন শিক্ষক যদি সেগুলো উপলব্ধি করেন, তাহলে পেশাগত বিষয়গুলোকে সামনে রেখে নানা দাবিদাওয়া তুলেও তিনি নিজের কর্তব্যকর্ম যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারেন। জাতীয়করণের ফলে যেহেতু তাদের অনেক সমস্যার সমাধান হবে, সুতরাং শিক্ষকরা এবার বাড়তি অনেক চিন্তা বাদ দিয়ে পড়ালেখার প্রতি মনোনিবেশ করতে পারবেন বলে আশা করতে চাই।
যেহেতু ইতোমধ্যে সরকারী স্কুলের শিক্ষকরা জাতীয়করনকৃত বিদ্যালয়ে বদলী হচ্ছে। তাই সকল সরকারী বিদ্যালয়ের মত প্রাক প্রাথমিক শিক্ষক, ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, এবং কমপক্ষে ২জন শিক্ষক সমন্বয়ের ব্যবস্থা করলে প্রাথমিক শিক্ষার মান দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
স্বরুপ দাস
প্রধান শিক্ষক
কেন্দ্রিয় যুগ্ন আহবায়ক
সাধারন সম্পাদক(দামুড়হুদা)
বাসপ্রাবিপ্রশিসমিতি
Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।